আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংখ্যালঘু ভাবনাটাই একটি দাসত্বের শেকল। এটি ভেঙে ফেলতে হবে। হিন্দুদের জমি দখল এবং মন্দির ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও তারা সবার অভিন্ন শত্রু, দুর্বৃত্ত।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা মন মানসিকতায় যদি ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগেন, মাইনোরিটি ভাবনাটাই একটা দাসত্বের শিকল। এই দাসত্বের শিকল ভেঙে ফেলতে হবে। মুসলমানের ভোট, আপনার ভোট, কি মূল্য কম? কোন পার্থক্য কি আছে? তাহলে কেন নিজেকে মাইনরিটি ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার অবদান রয়েছে, কারো অবদান কম নয়।
তিনি আরো বলেন, যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ, ধর্মীয় মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে তাদের মনে কষ্ট দেন, মন ভেঙে ফেলেন, এসব লোক রাজনৈতিক পরিচয়ে যদিও থাকেন তাদের আসল পরিচয় দুর্বৃত্ত। এরাই হিন্দুদের বাড়ি দখল করে। মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সবার অভিন্ন শত্রু। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, যখন কথা বলি তখন বিশ্বাস থেকেই কথা বলি। এই বাংলাদেশে ৭৫ থেকে একুশ বছর কারা শাসন করেছিল, সেই একুশ বছর প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল।
তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো বলেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করে ৬৮ বছরের সমস্যা শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। আমি এই কৃতিত্ব দেবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে। দীর্ঘ দিনের অবিশ্বাস-সন্দেহের দেয়াল তারা ভেঙে দিয়েছেন। অবিশ্বাস, সন্দেহের দেয়াল রেখে কোনো কিছু সমাধান সম্ভব নয়। আজকে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে গঙ্গা চুক্তিও আমরা করেছি। তিস্তা নদী নিয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এর সমাধানও অবশ্যই হবে। গায়ে পড়ে তিক্ততা সৃষ্টি করে সমাধান সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী জে এল ভোমিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী শ্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, পাবত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার।