জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সঠিক তদন্ত, ক্যাম্পাসে নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়ে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য সাদেকা হালিমের দপ্তরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা তাকে এই স্মারকলিপি দেন।
অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার পর থেকে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ তারা এই স্মারকলিপি জমা দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো অবন্তিকা হত্যার সব প্রমাণ আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, দ্রুততম সময়ে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ, আত্মহত্যা করা আরেক শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাসসহ পূর্বে দায়েরকৃত সব অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, পূর্বতন প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা, অবন্তিকা এবং অংকনের স্মৃতিতে ক্যাম্পাসে দুটি স্থায়ী ফলক নির্মাণ করা।
মূলত গতকাল বুধবার শিক্ষার্থীদের এক সংবাদ সম্মেলন শেষে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উপাচার্য ক্যাম্পাসে না আসায় তারা সেদিন স্মারকলিপি জমা দিতে পারেননি।
সেই সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাঙ্গনে কী করে এ রকম নিপীড়নের মতো পরিবেশ তৈরি হয়? ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যে ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কী? শুধু অবস্তিকার হত্যার বিচার হলেই কি নিপীড়নের সংস্কৃতি রুখবে?
শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২০ সাল থেকে অবন্তিকা বিচার চেয়ে আসছেন। কিন্তু প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এমন মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে যথার্থ মানবিক সম্পর্ক এবং শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার ছাড়া সামগ্রিকভাবে একটি বিকল্প সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যা করেন। অবন্তিকার কয়েকজন বন্ধু বলেন, তিনি ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। আর সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে রায়হানের পক্ষ নিয়ে তার (ফাইরুজ) সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ করেন তিনি। সেখানেই আত্মহত্যার কথা বলেন অবন্তিকা।