সোমালিয়ার উপকূলে ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। গত বুধবার দস্যুরা জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই মূলত নাবিকদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এখন আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমঝোতার কাজ শেষ করে নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে চাইছে মালিকপক্ষ। জাহাজের মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এমন আভাস দিয়েছে।
জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘নাবিকদের নিরাপদে ফেরাতে আমাদের কাজ চলছে।’ এর বেশি বিস্তারিত কোনো কথা বলেননি তিনি।
ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় বুধবার দস্যুরা জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে। সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলে নোঙর করে রাখা জাহাজ থেকেই যোগাযোগ করে দস্যুরা। ১২ মার্চ সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল=১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার) দূরে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করেছিল তারা। বর্তমানে জাহাজটি সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বুধবার দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের পর দুই পক্ষই দুই পক্ষকে আস্থায় আনার জন্য প্রাথমিক কাজগুলো যাচাই-বাছাই করছে। আস্থায় নেওয়ার পর মুক্তিপণের অঙ্ক নিয়ে দর–কষাকষি, কীভাবে মুক্তিপণ দেওয়া হবে—এসব বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা পাওয়া গেছে। দস্যুদের সঙ্গে মালিকপক্ষের দর–কষাকষিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য এসব আলোচনা খুব গোপন রাখা হয়।
এদিকে জিম্মি করে রাখা জাহাজটির চার থেকে পাঁচ নটিক্যাল মাইল দূরে বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। যুদ্ধজাহাজটি জিম্মি জাহাজকে নজরে রাখছে। অভিযান না চালালেও যুদ্ধজাহাজের নজরদারি নাবিকদের নিরাপদে ফেরাতে দস্যুদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন অভিজ্ঞ নাবিকেরা।
জানতে চাইলে নাবিকদের সংগঠন মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দস্যুরা যোগাযোগ শুরু করার অর্থ হলো জিম্মি নাবিকসহ জাহাজটি ফেরাতে কার্যকর আলোচনা শুরু হওয়া। বাংলাদেশের জাহাজ জিম্মি করার পর ভারত মহাসাগরে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে।
আনাম চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালে একই গ্রুপের জাহাজ এমভি জাহান মণি মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এবার খুব দ্রুততম সময়ে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে মালিকপক্ষ কাজ করবে বলে আমাদের আশা।