গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে পাকিস্তানি দালালদের প্রতিহত করতে হবে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

২৫শে মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে দেশ থেকে পাকিস্তানি দালালদের প্রতিহত ও পরাজিত করতে ওবায়দুল কাদের।

সোমবার বিকালে ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

universel cardiac hospital

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

আলোচনা সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেশি কথা বললে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেব।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে ২৫শে মার্চ গণহত্যা নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধের কথা নেই, বঙ্গবন্ধুর কথা নেই, এরা পাকিস্তানের দালাল। বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ভুয়া। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এই সমাবেশ। এখানে মুক্তিযোদ্ধা হাতে গুনলে কয়েকজনকে পাবেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না, তারা কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। এরা দালাল। এই দালালদের বিরোধিতার কারণেই ২৫শে মার্চ গণহত্যার স্বীকৃতি এবং পাকিস্তান থেকে ক্ষতিপূরণ পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশে অবস্থান করা পাকিস্তানি নাগরিকরা দেশের বোঝা হয়ে আছে। পাকিস্তান কথা দিয়েও তাদের নাগরিকদের ফেরত নেয়নি। একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তান একটিবারও দুঃখ প্রকাশ করেনি। পাকিস্তানের কোনো সরকারি লোক একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীর জন্য বাংলাদেশের জনগণ ও বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। সেই পাকিস্তানের যারা দালালি করে তারা আমাদের স্বাধীনতার শত্রু। বিএনপি পাকিস্তানের দালালি করে। এরা আমাদের শত্রু। এরাই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের দালালে বাংলাদেশ ভরে গেছে। ২৫শে মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে এই দালালদের প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে জানতে চান, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন? কোথায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন? কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন?

তিনি বলেন, ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে দিবাস্বপ্নে বিভোর। বিদেশে আওয়ামী লীগের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। বিএনপির প্রভু আছে। যারা তাদের স্বার্থের পক্ষে ওকালতি করে। আমাদের বন্ধুরা একাত্তরের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো বিদেশি বন্ধু হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু বিএনপির প্রভুরা যখন নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করেছিল তখন আমাদের বন্ধুরা নির্বাচনের পক্ষে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল।

ভারতীয় পণ্য ব্যবহার নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের ঘরে ঘরে ভারতীয় পণ্য। এখন রাজনীতি করার জন্য রিজভী গা থেকে কাশ্মীরি শাল ফেলে দিয়ে আগুনে পুড়িয়েছে। আরো কটি শাল রিজভীর ঘরে আছে কে জানে? ভারতীয় পণ্য ছাড়া খাবার জোটে না। ভারতীয় পেঁয়াজ কার ঘরে নেই?

বিএনপি মহাসচিবকে সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব আপনিও রিজভীর মতো মাথা গরম করবেন না। বেশি কথা বললে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেব।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতা মঈন খান গণতন্ত্র উদ্ধারে ভারতের সহযোগিতা চান। আর রিজভী শাল ফেলে দেয়। তাদের নিজেদের মধ্যেই মিল নেই। একেক জন একেক কথা বলেন।

এ সময় বিএনপির আন্দোলন, অভ্যুত্থান ও ৩২ দফাকে ভুয়া এবং মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশকে ডাবল ভুয়া হিসেবে অভিহিত করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন