গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, নারী হচ্ছে সকল শক্তির উৎস। নারীদেরকে শক্তির আঁধার হিসেবে বিবেচনা করে নারী শক্তির উত্থানে বর্তমান সরকার কাজ করছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া ডানপন্ত্রী কোনো রাজনৈতিক দল নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের রাষ্ট্রপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন, তাঁর মন্ত্রিসভায় একাধিক নারী ছিল।
শনিবার (৩০ মার্চ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে আইসিটি ডিভিশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন HER POWER প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নবীনগর উপজেলার ১৬০ জন নারী উদ্যোক্তার প্রশিক্ষণ শেষে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেই সমাজই এগিয়ে যায়, যে সমাজে নারী এবং পুরুষ সমানতলে এগিয়ে যায়। সনাতন ধর্মীয় মতে নারী হচ্ছে আদ্যশক্তি। ইসলাম ধর্মীয় মতেও সমাজে নারীর গুরুত্ব পুরুষের চেয়ে কম নয়। যে কোন জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য নারী পুরুষ উভয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীশক্তির পূর্ণবিকাশ ও উন্মোচন এখনো হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে নারীর ক্ষমতায়নে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর পদাতিক ডিভিশন, বিমান বাহিনী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদসমূহ এমনকি বিচারপতি হিসেবেও নারীদের নিয়োগ ও পদায়ন করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে নারীরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নারীরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এ সেক্টরে আরও বিস্তর সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ HER POWER প্রজেক্ট এর মাধ্যমে দেশের ৪৪ টি জেলার ১৩০ টি উপজেলায় নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নবীনগর উপজেলায় ১৮০ জন নারী উদ্যোক্তাকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো: শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি এস.এম শান্তুনু চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ, হার পাওয়ার প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক নিলুফা ইয়াছমিন।
পরে অতিথিবৃন্দ উদ্যোক্তাদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করেন।
এর আগে মন্ত্রী সার্কিট হাউজে ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পক্ষ থেকে জেলার নয়টি উপজেলার অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্রদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানের নিকট ৯ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
বিকেলে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা কলেজের একটি ছয় তলা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিজ্ঞ পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকনের পক্ষে জেলার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ৫০০ অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্রের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী সদর উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পর্যালোচনা সভা ও মাসিক সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা এবং বিজ্ঞ পিপি কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ইফতার মাহফিলের আয়োজন না করে ইফতার মাহফিলের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করে এসব ঈদ সামগ্রী ক্রয় করা হয়।