গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন: যুক্তরাষ্ট্র একদিকে উদ্বেগ প্রকাশ করে, অন্যদিক বোমা পাঠায়

মত ও পথ ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলি হামলা। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এক আর ভেতরে আরেক। ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরায়েলের হামলা নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। কিন্তু অন্যদিকে একই সময়ে ইসরায়েলের কাছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের বোমা ও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। শুক্রবার এ বিষয়ে জ্ঞাত দুটি সূত্র এ তথ্য দিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট–এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা পাঠানোর বিষয়টি ওয়াশিংটন পোস্ট–এর কাছে নিশ্চিত করেছে সূত্রগুলো। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে নতুন যে সামরিক–সহায়তা প্যাকেজ ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে, তাতে ২০০০ পাউন্ড ওজনের এমকে ৮৪ নামের ১ হাজার ৮০০টি বোমা ও ৫০০ পাউন্ড ওজনের এমকে ৮২ মডেলের ৫০০টির বেশি বোমা রয়েছে।

universel cardiac hospital

গাজায় স্থল হামলার পাশাপাশি একটানা বোমা হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে তেল আবিবকে এ অস্ত্রসহায়তা দিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকেও সমালোচনা হচ্ছে। দলটির কয়েকজন সদস্য ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে অনেকটাই তড়িঘড়ি করে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও অন্যান্য যুদ্ধসরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। তবে ডেমোক্র্যাট দলের কয়েকজন সদস্য ও আরব-আমেরিকান গ্রুপের পক্ষ থেকে দ্রুত ইসরায়েলকে এমন অস্ত্র দেওয়ার সমালোচনা করা হয়। তাদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে ইসরায়েলকে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। গত শুক্রবার বাইডেন গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন করায় অনেক আরব-আমেরিকান কষ্ট পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।

সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়। তাতে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া বাইডেন বলেন, রাফায় ইসরায়েল হামলা চালালে তা হবে বড় ভুল। রাফায় অভিযান থেকে ইসরায়েলকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেন, প্রয়োজনে একাই রাফায় হামলা চালাবে ইসরায়েল। এ নিয়ে নেতানিয়াহু ও বাইডেনের মধ্যে বাহ্যিক একটা দূরত্ব তৈরি হয়। কিন্তু তারপরও ইসরায়েলকে সমর্থন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন। তবে ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া নিয়ে হোয়াইট হাউস বা ওয়াশিংটনে ইসরায়েল দূতাবাস থেকে কিছু জানানো হয়নি।

চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের ওয়াশিংটন সফরের পর এই অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি সামনে এল। গ্যালান্ট তার সফরে ওয়াশিংটনের কাছে অস্ত্র চান। গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক আধিপত্য ধরে রাখতে তিনি ইসরায়েলে নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন।

শেয়ার করুন