ইসরায়েলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করতে আইন পাস করেছে রাষ্ট্রটির আইনসভা নেসেট। কয়েক দফা পর্যালোচনার পর সোমবার আইনটিকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন ইসরায়েলি আইনপ্রণেতারা।
নতুন এই আইন অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যদি কখনও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে আলজাজিরাকে বন্ধ করে দিতে সুপারিশ করে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদমাধ্যমটির সম্প্রচার ইসরায়েলে বন্ধ করা, আলজাজিরার ইসরায়েল শাখার কার্যালয় সিলগালা করা এবং সেখানকার সমস্ত মালপত্র বাজেয়াপ্ত করার এখতিয়ার পাবে রাষ্ট্রটির তথ্য মন্ত্রণালয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম বিল আকারে এটি উত্থাপিত হয়েছিল নেসেটে। চার-পাঁচ দফায় পর্যালোচনার পর সোমবার ইসরায়েলি আইনপ্রণেতাদের ভোটে আইনে পরিণত হলো বিলটি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকেই আলজাজিরার প্রতি বৈরী মনোভাব প্রদর্শন করে আসছে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রটির সরকার। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একাধিকবার মধ্যপ্রাচ্যের এই জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমটিকে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মুখপাত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সদ্য হার্নিয়া অপারেশনের পর বর্তমানে বিশ্রামে রয়েছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সোমবার নেসেটে আইনটি পাসের পর তাকে স্বাগত জানিয়ে সেই অবস্থাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, ‘আলজাজিরা ইসরায়েলের নিরাপত্তার ক্ষতি করেছে, ৭ অক্টোবর হামলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে এবং ইসরায়েলের সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত উসকানি দিয়ে যাচ্ছে।’
‘সন্ত্রাসী চ্যানেল আলজাজিরা আর ইসরায়েলে সম্প্রচারিত হবে না। (ইসরায়েলে) চ্যানেলটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা আমার আছে।’
এদিকে নেতানিয়াহুর এই বার্তাকে ‘অপবাদ’ উল্লেক করে পাল্টা এক বিবৃতিতে আলজাজিরা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আলজাজিরার ওপর মিথ্যে কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা করেছেন। তার এ ধরনের অপবাদ আমাদের দৃঢ় এবং পেশাদার সংবাদ পরিবেশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। তবে ইসরায়েলে যদি আমাদের সংবাদকর্মী বা কার্যালয়ের ওপর কোনো ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে, তাহলে সেজন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দায়ী থাকবেন।’
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আরটি