নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জীবন শেষ করার জন্য চাপ বাড়ছে

মত ও পথ ডেস্ক

নেতানিয়াহু
নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি

ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিভক্তি আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলবাসী প্রচণ্ড ধাক্কা খান এবং দেশটিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে, তাতে ওই বিভক্তি কিছু সময়ের জন্য আড়ালে ছিল। তবে তারপর ছয় মাস না যেতেই আবারও ইসরায়েলের রাজপথে নেমেছেন হাজারো বিক্ষোভকারী।

হামাসের হামলার জবাবে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যে যুদ্ধ চালাচ্ছে, তা ওই বিক্ষোভকারীদের একটি সংকল্পকে আরও জোরদার করে তুলেছে। তা হলো দেশটির দীর্ঘ দিনের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গদি থেকে হটানো। খবর বিবিসির।

universel cardiac hospital

তবে রাজপথে পুলিশের বড় বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। যেমনটা হয়েছে জেরুজালেমে। শহরটির উত্তর–দক্ষিণ বরাবর প্রধান মহাসড়ক বেগিন বুলেভার্ড অবরোধ করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান থেকে দুর্গন্ধযুক্ত পানি ছিটায় ইসরায়েলি পুলিশ।

নেতানিয়াহুর পদত্যাগ ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের যেসব স্লোগান আগে থেকেই সুপরিচিত ছিল, তাতে নতুন যুক্ত হয়েছে গাজায় এখনো জিম্মি থাকা প্রায় ১৩০ জনকে মুক্ত করার দাবি। জিম্মি এসব ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

৭ অক্টোবর এই জিম্মিদের ইসরায়েল থেকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাস সদস্যরা। বিক্ষোভকারীদের মতো এই জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষদের মনে একটা বড় ভয় কাজ করছে—তা হলো কোনো চুক্তি ছাড়া যুদ্ধ যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে জিম্মিদের অনেকেই হয়তো বন্দী অবস্থাতেই মারা যাবেন।

গত রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের চারপাশে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। নেতানিয়াহু একসময় বলতেন, একমাত্র তিনিই ইসরায়েলকে নিরাপদ রাখতে পারেন। অনেক ইসরায়েলিও তাকে বিশ্বাস করতেন। নেতানিয়াহুর ভাষ্য ছিল, তিনিই ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। ইসরায়েলের অধিকৃত ভূখণ্ডে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে চায়, সেখানে ইহুদিদের বসতি স্থাপন করে দেবেন। আর এ জন্য ইসরায়েলকে কোনো কিছু ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

তবে সবকিছু বদলে দেয় ৭ অক্টোবরের ইসরায়েলে হামাসের হামলা। নিরাপত্তার এই ব্যর্থতার জন্য অনেক ইসরায়েলিই নেতানিয়াহুকে দায়ী মনে করেন। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অনেকে বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করেছেন, তাদের ভুলে হামাসের হামলা হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু ব্যতিক্রম। এই হামলার কোনো দায় কখনোই তিনি নেননি। এতেই চটেছেন রোববার সন্ধ্যায় রাজপথে নামা বিক্ষোভকারীরা।

শেয়ার করুন