আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ অবস্থায় যাদের এখনো অফিস বা কাজ রয়েছে তারা থেকে গেছেন রাজধানীতে। তবে ঈদের আগে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার চাপ এড়াতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেইসব যাত্রীর চাপ বেড়েছে মহাখালী বাস টার্মিনালে।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে এমন যাত্রী বেশি দেখা গেছে। এছাড়া পরিবারের স্বজনরা এমন সব যাত্রীদের বাসে তুলে দিতে এসে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
সকাল ১০টায় মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছিল একতা পরিবহন। আর এই বাসের যাত্রী হয়েছেন শরিফা খাতুন এবং তার ৮ বছরের ছেলে রাফসান আহমেদ। শরিফা খাতুন বলেন, আমার হাজবেন্ডের এখনো কয়েকদিন অফিস আছে। আর ঈদের সময় যেহেতু রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড় হয়, যাওয়াও ঝামেলা। তাই আমরা কয়েকদিন আগেই ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার ছেলের বাবা এসে গাড়িতে তুলে দিয়ে গেছেন, আর আমরা নাটোরে বাবুর দাদা বাড়িতে যাব।
একইভাবে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ ছেড়ে যাওয়া এনা পরিবহনের একটি বাসে স্ত্রী ও মেয়েকে তুলে দিতে এসেছেন জাহিদুল ইসলাম নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ঈদের সময় স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া খুব কঠিন। একদিকে পুরো রাস্তা জুড়ে যানজট, অন্যদিকে ঠিকমতো গাড়ির সিট পাওয়া যায় না তাই আগেই পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে দিচ্ছি নিজ এলাকায়। আমার এখনো কয়েকদিন অফিস আছে, যদিও পরিবার আগে চলে গেলে আমার এই কয়দিন থাকা খাওয়ার সমস্যা তবুও ভোগান্তি এড়াতে পরিবারের সদস্যদের আগেই পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে ছেড়ে যাওয়া দেশ ট্রাভেলস নামে একটি বাস কাউন্টারের সহকারী ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দূরপাল্লার বাসের আজকের টিকিটসহ, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব টিকিটই বিক্রি হয়ে গেছে আগেই। আজ শুধু যাত্রীরা আসছে এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে রওনা হচ্ছে। তবে এখন অনেক চাকরিজীবী কর্মজীবীরা ঢাকা ছাড়ছে না। বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের আগে পাঠিয়ে দিচ্ছে, আমাদের আজকের বাসগুলোতে এমন যাত্রী সংখ্যায় বেশি। মূলত ঈদের দুইদিন আগে সবাই যখন ঢাকা চলে যাবে ওই সময়টাতে সবচেয়ে বেশি ভিড় হবে।
এদিকে এনা পরিবহন, ন্যাশনাল পরিবহন, একতা পরিবহন, দেশ ট্রাভেলসহ অন্যান্য ভালোমানের বাসগুলোতে ঈদ উপলক্ষ্যে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তবে টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুরগামী কিছু লোকাল কোয়ালিটির বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ বোনাসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে যাত্রীরা।
এ বিষয়ে বিনিময় নামে একটি বাসের সুপারভাইজার এরশাদ আলী বলেন, ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না, তবে যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ বোনাস চাচ্ছি আমরা। যদি কেউ খুশি মনে ভাড়ার সঙ্গে আমাদের দেয় তাহলে নিচ্ছি, কেউ না দিতে চাইলে জোর করে নিচ্ছি না। আগের ভড়াতেই যাত্রীদের আনা নেওয়া করা হচ্ছে। তবে ঈদের দুই-তিন দিন আগ থেকে অতিরিক্ত যানজটের কারণে অল্প কিছু পরিমাণে ভাড়া বাড়তে পারে।