সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। এ হামলার পেছনে ইসরায়েল জড়িত আছে, এমনটা মনে করা হচ্ছে। ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে সরে যাওয়ার উপদেশ দিয়েছে ইরান। খবর- ব্লুমবার্গ।
ইরানের প্রেসিডেন্টের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ জামশেদি জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ইরান। নেতানিয়াহুর ফাঁদে যেন পা না দেয় যুক্তরাষ্ট্র, এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয়েছে, সরে দাঁড়াও নয়তো তুমিও আহত হবে।
এই চিঠির উত্তর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান যেন মার্কিন টার্গেটে হামলা না করে, চিঠিতে সেই অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
তবে এই চিঠির ব্যাপারে ব্লুমবার্গকে কোনো তথ্য দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
সিএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্থাপনাগুলোতে ইরান হামলা করতে পারে, এমন ইঙ্গিত পেয়ে দুশ্চিন্তায় আছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তথ্যের সূত্র হিসেবে একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে সংবাদ মাধ্যম এনবিসি আরও দুইজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেন, জো বাইডেনের সরকার মনে করছে ইসরায়েলের ভেতরে হামলা হবে। তবে এই হামলা হবে সামরিক বা গোয়েন্দা সংস্থার ওপর, বেসামরিক জনগণের ওপর নয়।
ব্লুমবার্গ আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত ইরানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে না। কিন্তু সোমবারের হামলার পর তারা তড়িঘড়ি করে ইরানকে জানিয়েছে যে সিরিয়ায় এমন হামলা হতে পারে এ ব্যাপারে কিছুই জানত না তারা। এতে বোঝা যায়, ইরান মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্থাপনায় হামলা করবে এমন ভয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
হামলার পর ইরান জানিয়েছে ইসরায়েলকে ‘চপেটাঘাত’ করবে তারা। তবে ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা করবে, নাকি তাদের হয়ে লেবাননের সীমান্ত এলাকায় ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এই হামলা চালাবে, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইরানের হুমকির পর সতর্ক হয়েছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে সব সেনার ছুটি বাতিল করেছে ইহুদিবাদী দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় তেল আবিবে খোলা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র। ইসরায়েল বলছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় এখনও স্বীকার করেনি ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) সিনিয়র কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ পাঁচ সামরিক উপদেষ্টা ও দুই জেনারেল নিহত হন।
শুক্রবার হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ জানিয়েছেন, ইরান অবশ্যই এই হামলার উত্তর দেবে। কিন্তু হামলার উত্তরে কী করা হবে, এই সিদ্ধান্ত নেবে ইরান। এতে হিজবুল্লাহ হস্তক্ষেপ করবে না।