বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কুকিচিনের সঙ্গে মিশে দেশের স্থিতিশীলতাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
শনিবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা’-এর পক্ষে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ সময় মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী বলেন, দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যসহ সব দিক দিয়ে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এটাকে নস্যাৎ করে দিতে সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন সদস্যদেরকে হায়ার করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, যারা আমাদের জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করছিল কিন্তু পারে নাই, তারা এখন হতাশ হয়ে কুকি-চিন ও সন্ত্রাসবাদী গ্রুপগুলোকে খুঁজে বের করেছে। তারা শুধু যে ব্যাংক ব্যাংক লুট করেছে তা-না, তারা অপহরণ, অগ্নি সন্ত্রাস করার চেষ্টা করবে। এসব বিষয়ে আপনারা সতর্ক থাকবেন। বিশেষ করে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, আপনারা এসবের পাহারা বৃদ্ধি করবেন। দলের নেতাকর্মীদেরকেও এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
এসময় উপজেলা আনসার ভিডিপির সদস্য ও গ্রাম পুলিশদেরকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভারত বিরোধিতা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা হচ্ছে তাদের পুরানো রাজনীতি। কারণ ভারত হচ্ছে মুক্তি সংগ্রামে আওয়ামী লীগের পরম বন্ধু। ভারতের সহযোগিতায় মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানকে পরাজিত করেছি। তাদের প্রশিক্ষিত ৯৪ হাজার সেনা সদস্য মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং ভারত বিরোধীতা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের একটি অংশ।
তিনি বলেন, বিএনপি ভারতের বিরোধিতার যে আহবান জানিয়েছে এটা ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
গণপূর্তমন্ত্রী আরও বলেন, এই ঈদেও তারা ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করবে। তারা ঈদে যে সমস্ত মসলা ব্যবহার করবে এর শতকরা ৯০ ভাগ ভারত থেকে আসবে। ভারতীয় মসলা ছাড়া তাদের চলবে না।
তিনি জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রসঙ্গে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিকাংশ বিএনপি নেতাকর্মীর ভারতের আগরতলার সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য আছে। সুতরাং এটা তাদের ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশ একা চলতে পারে না। এক দেশ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেমন আমাকে সম্পর্ক রাখতে হবে, তেমনিভাবে রাশিয়ার সঙ্গেও আমাকে সম্পর্ক রাখতে হবে। এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যে খারাপ সম্পর্ক, তারপরও তাদের সঙ্গে এটা রাখতে হবে। বিশ্ব হচ্ছে এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজ। এখানে একজন আরেকজনকে ছাড়া চলতে পারবে না।
এর আগে মন্ত্রী বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। এসময় তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সহ সকলের প্রতি আহবান জানান। পরে মন্ত্রী ১৭০ জন অসহায় মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী চাল, ডাল, সেমাই, দুধ চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেন।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মিরধাসহ উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও ১০ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।