দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান যেকোনো সময় ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে এবং এর ফলে বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় নিজ নাগরিকদের ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও লেবানন ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে বিভিন্ন দেশ। এদের মধ্যে রয়েছে ভারত, ফ্রান্স, রাশিয়া, পোল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যও।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলায় ইরানের দুই জেনারেলসহ ১৩ জন নিহত হন। কেউ দায়ভার স্বীকার না করলেও এ হামলা ইসরায়েল চালিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এ ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয় তেহরান। এর ফলে নতুন করে যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এক ঘোষণায় তাদের নাগরিকদের ইরান, লেবানন, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, ইরান-ভিত্তিক কূটনীতিকদের স্বজনেরা ফ্রান্সে ফিরে আসবেন। এছাড়া, ফরাসি বেসামরিক কর্মীদের উল্লেখিত দেশ ও অঞ্চলগুলোতে কোনো ধরনের মিশন পরিচালনা করতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘ইরান থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আক্রমণের আশঙ্কায়’ ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনে অনাবশ্যক ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে নিজ নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এক বিজ্ঞপ্তিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ অফিস উত্তর ইসরায়েল, গাজা উপত্যকা, গাজার নিকটবর্তী অঞ্চল এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সব ধরনের ভ্রমণের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করেছে। তবে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম এবং জেরুজালেম ও তেল আবিবের মধ্যবর্তী রুট ১ এই তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েল, লেবানন এবং ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় রাশিয়াও তাদের নাগরিকদের ‘এসব অঞ্চলে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে’ জোরালো পরামর্শ দিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের পাশাপাশি লেবানন এবং ইসরায়েলের মধ্যে ‘ব্লু লাইন’ এলাকার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল রয়েছে।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েল, ফিলিস্তিন এবং লেবাননে ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, এসব এলাকায় হঠাৎ করে সামরিক অভিযান বাড়তে পারে। তেমনটি হলে এই তিনটি দেশ ছেড়ে যাওয়ায় উল্লেখযোগ্য অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতের বিবৃতিতে ইরান এবং ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ‘অঞ্চলটির বিরাজমান পরিস্থিতি’ বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারতীয়দের এই দুটি দেশে না যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জার্মানি তার নাগরিকদের ইরান ত্যাগ করার জন্য বিশেষভাবে পরামর্শ দিয়েছে। বলেছে, উত্তেজনা বাড়লে দেশটি ছেড়ে বেরোনো কঠিন হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে কর্মকরত সব মার্কিন কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বৃহত্তর তেল আবিব, জেরুজালেম এবং বেরশেবা এলাকার বাইরে ব্যক্তিগত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা