ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে নিহত হয়েছেন ১৭ জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে চালানো রুশ এই হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জরুরি সেবা জানিয়েছে। একইসঙ্গে এই হামলায় তিন শিশুসহ ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি আট তলা ভবনে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে বলে শহরের মেয়র জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
বিবিসি বলছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর এ হামলা চালানো হয়। সেই হামলার বিস্তারিত এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, যদিও স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো উত্তর ক্রিমিয়ার ঝানকোয় এয়ারফিল্ডে আগুনের ভিডিও শেয়ার করেছে।
চেরনিহিভের ভারপ্রাপ্ত মেয়র অলেক্সান্ডার লোমাকো বলেছেন, একটি ভবনে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত করেছে এবং বেশ কয়েকটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, হামলায় আরও চারটি উচ্চ ভবন, একটি হাসপাতাল, কয়েক ডজন গাড়ি এবং একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জরুরি পরিষেবাগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং কর্মকর্তারা জনসাধারণকে রক্ত দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আবেদন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ান এই হামলাটি ঘটত না ‘যদি ইউক্রেন পর্যাপ্ত আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পেত’। এসময় তিনি আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছে তার আবেদনের পুনরাবৃত্তি করেন।
চেরনিহিভ রাশিয়ান সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দূরে অবস্থিত।
২০২২ আক্রমণের শুরুতে শহর থেকে দূরে নয় এমন চেরনিহিভ অঞ্চলের কিছু অংশ কয়েক সপ্তাহ ধরে দখল করে রেখেছিল রাশিয়া। সেসময় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শহরটি অবরুদ্ধ ছিল। যুদ্ধে শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শত শত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে মেয়র জানিয়েছেন।
এছাড়া ২০২৩ সালের আগস্টে শহরের একটি থিয়েটারও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়। এতে সেসময় সাতজন নিহত হয়েছিলেন।