আপাতত উত্তেজনা কমিয়ে আনতে চায় ইরান-ইসরায়েল

মত ও পথ ডেস্ক

ইরানের ইস্পাহানে ড্রোন হামলার জন্য দায়ী কে, সে বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এখনো গতকাল শুক্রবার রাতের হামলার দায় স্বীকার করেননি। ইরানের পক্ষ থেকে হামলার বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি। তারা বলছে, ক্ষুদ্র ড্রোন দিয়ে হামলার যে চেষ্টা করা হয়েছিল, তা তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।

ইরান হয়তো ইসরায়েলের জন্য উল্লেখযোগ্য কিন্তু সীমিত হামলার বিষয়টির গুরুত্ব কমিয়ে দিচ্ছে। ইসরায়েলে গত সপ্তাহে তাদের বড় হামলার কাছে একে গৌণ মনে করছে। এ থেকে সরল চোখে যা দেখা যাচ্ছে, তা হলো—দুই আঞ্চলিক শক্তিধর ইরান এবং ইসরায়েল উভয়ই তাদের মধ্যেকার সবচেয়ে বিপজ্জনক উত্তেজনার বহর গুটিয়ে নিতে আগ্রহী। খবর সিএনএনের।

universel cardiac hospital

এ মাসে সিরিয়ার দামেস্কে ইরান দূতাবাসে হামলার মাধ্যমে উত্তেজনার সূচনা করে ইসরায়েল। এর জবাবে ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেয় ইরান। কিন্তু তাদের অধিকাংশ ড্রোন ইসরায়েলের সীমানা অতিক্রম করার আগেই ধ্বংস হয়। গত শুক্রবার ইরানে হামলার পর আঞ্চলিক গোয়ন্দাসূত্র সিএনএনকে জানায়, ইরানের পক্ষ থেকে এ হামলার জবাব দেওয়া হবে না। এতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি হামলার পরিস্থিতি আপাতত স্থগিত হয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যা ঘটেছে, তা শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলটি গভীরভাবে জড়িয়ে গেছে। সেখানে আঞ্চলিক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সম্ভাব্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার সুযোগও তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরানে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলা করা হলে তাতে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকেই সম্ভাব্য উত্তেজনা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়। এর আগে ইসরায়েলের দিকে ধেয়ে আসা ৭০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আক্রমণে অংশ না নিলেও ইসরায়েলকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবারের হামলায় অংশ নিলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ হতো। এ অঞ্চলে তাদের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কে নববড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল।

তেহরান সংযম দেখানোর ক্ষেত্রে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকটিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পররাষ্ট্রনীতির মূলে রয়েছে। গত বছর চীনের মধ্যস্থতায় তেহরান ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন পর সম্পর্কের শীতল বরফ গলতে শুরু করে। আঞ্চলিক অশান্তি তৈরি হলে এই সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়ার ঝুঁকি তৈরি হতো।

শেয়ার করুন