বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে নিজ দেশের তুলনা করতে গিয়ে আক্ষেপ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বাংলাদেশকে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, একটা সময় যাদের পাকিস্তানের বোঝা মনে করা হতো, সেই দেশটি আজ শিল্পায়নে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। এখন বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমাদের লজ্জা লাগে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে একটি অধিবেশন চলার সময় বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টানেন শাহবাজ শরিফ। বলেন, আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম, তখন আমাদের বলা হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) আমাদের কাঁধের বোঝা। অথচ সেই বোঝা আজ কোথায় পৌঁছে গেছে, তা আপনারা সবাই জানেন। আমরা যখন তাদের দিকে তাকাই, তখন লজ্জাবোধ করি।
২০২৩ সালে বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় পাকিস্তান
পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচির সিন্ধু সিএম হাউজে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতির উপায় খুঁজতে বৈঠকে বসেছিলেন শাহবাজ। ব্যবসায়ী নেতারা এসময় অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাশক্তির প্রশংসা করলেও, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার বিষয়েও সতর্ক করেন।
দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য শাহবাজকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে মনোনিবেশ করারও পরামর্শ দিয়েছেন করাচির ব্যবসায়ীরা। এমনকি, তারা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করারও অনুরোধ জানান।
পাকিস্তানের আরিফ হাবিব গ্রুপের প্রধান আরিফ হাবিব প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি চুক্তি করেছেন, যেগুলো ভালো ফলাফল দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে করা চুক্তি তাদের মধ্যে একটি।
‘আমি আপনাকে আরও কয়েকটি চুক্তি করার পরামর্শ দিতে চাই। তার মধ্যে একটি হলো- ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য, যা আমাদের অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে। দ্বিতীয়ত, আদিয়ালা কারাগারে বন্দি ইমরান খানের সঙ্গে আপনার মীমাংসায় আসা উচিত। আমি বিশ্বাস করি, আপনি এটি করতে পারবেন।’
টানা কয়েক বছর ধরেই তীব্র অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি মুদ্রার মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বহুগুণ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও টান পড়েছে। আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক সংকট। সব মিলিয়ে বেহাল পাকিস্তান।
বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৮০০ কোটি ডলার, যা দিয়ে মাত্র দুই মাসের চাহিদা মেটানোর মতো পণ্যসামগ্রী আমদানি করতে পারবে ইসলামাবাদ। দেশটির সরকার এই সংকট মোকাবিলায় বারবার আইএমএফের কাছে ধরনা দিচ্ছে।
সূত্র: ডন, হিন্দুস্তান টাইমস