ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহ শরণার্থী শিবিরে আবারও হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের লাগামহীন বোমা হামলায় মোট ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হলেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জন শিশু রয়েছে।
এদিকে গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটি নতুন যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা তারা পর্যালোচনা করছেন। কারণ ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বন্দি বিনিময় চুক্তিতে পৌঁছালে রাফাহ-তে পরিকল্পিত আক্রমণ ‘স্থগিত’ হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপকভাবে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। এর ফলে এই ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠী বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ।
ইতোমধ্যেই ইসরায়েল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে। কিন্তু সেটা উপেক্ষা করেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী।