উল্কা গেমসের ‘কর ফাঁকি’র ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান-১ শাখায় অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি টিম।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় কর অঞ্চল-১৫ এর ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে এক বিশেষ টিম ব্র্যাক ব্যাংকের ওই শাখায় অভিযান শুরু করে। তবে দিনভর নানান চেষ্টায়ও কর ফাঁকির ওই ৫০ কোটি টাকা আদায় করতে পারেননি এনবিআর কর্মকর্তারা। রাত ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাংকের ওই শাখায় এনবিআর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর তারা বেরিয়ে যান।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এমন আচরণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। অন্যদিকে ব্র্যাক ব্যাংক জানিয়েছে, আদালতের আদেশ থাকায় টাকা দেওয়া যায়নি।

উল্কা গেমস নামে একটি অনলাইন জুয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে দুই বছর আগে তদন্ত শুরু করে এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। টাকা নিয়ে কোম্পানিটি যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য উল্কা গেমসের ব্র্যাক ব্যাংকে থাকা ৫৩ কোটি টাকা ফ্রিজ করে সিআইসি। তদন্তে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ফাঁকির প্রমাণ মেলে।

জানা যায়, মঙ্গলবার অ্যাকাউন্ট সচল করে টাকা আদায়ে কর অঞ্চল ১৫ কে নির্দেশনা দেয় সিআইসি। আদেশ পেয়ে গুলশান শাখায় যান কর্মকর্তারা। তবে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ব্যাংক। এরপর ব্যাংকে আসেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। রাত দশটা পর্যন্ত আলোচনা করে দুপক্ষ।

জানা গেছে, আলোচনায় ব্র্যাক ব্যাংক জানায় ওই কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এই অজুহাতে টাকা ছাড় করতে রাজি নয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যদিও এনবিআরের দাবি পাওনার সঙ্গে ওই মামলার কোনো যোগসাজশ নেই। করের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সে কারণে এনবিআর চেয়ারম্যানের লিখিত অনুমোদন নিয়েই রাজস্ব আদায় করতে গেছে বিশেষ টিম।

কর অঞ্চল ১৫ এর উপকমিশনার ফারজানুল ইসলাম বলেন, আমাদের ধৈর্য ধরা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করছে না। এই টাকা নেওয়া ছাড়া কোনো অপশন নাই। এই টাকা আমাদের নিতেই হবে।

ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখার ম্যানেজার হাসান মাহমুদ বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন ও আদালত অবমাননার ঝুঁকি থাকায় এনবিআরের অনুরোধ রক্ষা করা সম্ভব না।

ব্যাংকে থাকা টাকা নিয়ে মামলা চলছে উল্কা গেমস ও ভারতীয় কোম্পানি মুনফ্রগের মধ্যে। ব্র্যাক ব্যাংকের দাবি, মামলার জেরে এই টাকা লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এনবিআর এই টাকা পাবে কি না সে বিষয়ে শুনানি হবে ৫ মে।

শেয়ার করুন