জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, শুধু ব্যক্তি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান নয়, অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানও কর দিতে চায় না। তারা কর না দেওয়ার জন্য তদবির করে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে করণীয় বিষয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সেমিনারের আয়োজন করে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, যতই মুখে মুখে বলা হয় যে আমরা সবাই কর-ভ্যাট দিতে চাই; আসলে একটা বড় অংশই কর দিতে চায় না। এটা তাদের জন্য সহজ বিষয় নয়। শুধু ব্যক্তিপর্যায়ে নয়; করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে, এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেও অনবরত তদবির আসে করছাড় দেওয়া বা কর না দেওয়ার বিষয়ে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, কাঁচামাল আমদানির খরচ বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির কারণে জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি—এ সবকিছুই আমরা হজম করতে পারি। শুধু কর দেওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মানসিকতা নেই।
উন্নত দেশ হতে হলে রাজস্ব উৎস বাড়ানোর বিকল্প নেই উল্লেখ করে রহমাতুল মুনিম বলেন, উন্নত দেশগুলো শুল্কর চেয়ে প্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি নির্ভর করে। দেশে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বেশি থাকলে অর্থনীতির পরিসর বাড়ে। কিন্তু স্থানীয় শিল্পকে সুবিধা দিতে হলে তাদের শুল্কছাড় দিতে হবে। ফলে প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব আদায়ের নির্ভরতা কমিয়ে তা ব্যক্তিপর্যায়ে (প্রত্যক্ষ কর) নিতে হবে।
প্রত্যক্ষ রাজস্ব বাড়াতে অটোমেশনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি করদাতাদের উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, আমরা দোকানে দোকানে ইএফডি যন্ত্র বসিয়েছি। কিন্তু দোকানদারেরা ভ্যাটের রসিদ (ইনভয়েস) তৈরি করে না। এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। ক্রেতারা বিক্রেতার থেকে ভ্যাট রসিদ নিলেই সরকারের কোষাগারে সে টাকা জমা হবে।