বিএনপির নেতাদের উপজেলা নির্বাচন থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিএনপির ৭৩ জন নেতা মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন। এর মধ্যে মাত্র ১২ জনকে বুঝিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানো সম্ভব হয়েছে। এখনো ৬১ নেতা নির্বাচনে রয়ে গেছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, যে ৬১ জন নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের গতকাল বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও ৬১ জনকে একযোগে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের দিকে যাচ্ছে বিএনপি। যদি এর মধ্যে কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা না দেন, তাহলে প্রথম ধাপের ৭২ জনসহ দুই ধাপে বিএনপির নেতাদের বহিষ্কারের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৩৩–এ।
বিএনপির নেতারা বলছেন, খুব কমসংখ্যক প্রার্থীকে বুঝিয়ে নির্বাচন থেকে ফেরানো যাচ্ছে। এমনকি প্রার্থীদের নির্বাচনবিমুখ করতে কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলার নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেটিও খুব একটা কাজে লাগছে না। এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকেরা অস্বস্তিতে পড়েছেন।
হিসাবে দেখা যাচ্ছে, প্রথম ধাপেও প্রার্থীদের থামাতে বিএনপির নেতৃত্বের তৎপরতা তেমন একটা কাজে লাগেনি। বোঝানোর পর মাত্র ১৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এর মধ্যে ১৫ জন চেয়ারম্যান পদে, ১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত প্রথম ধাপে ৭২ জনকে বহিষ্কার করতে হয়। বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপি নিশ্চিত করেছে, বহিষ্কৃত ব্যক্তিরা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বর্তমান অথবা সাবেক নেতা।
বিএনপির দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা ভোটের দ্বিতীয় দফায় বিএনপির ৬১ জন নেতার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৫ জন। এ ছাড়া ২০ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ১৬ জন। দ্বিতীয় ধাপে যে ১২ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, তার মধ্যে ৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ছিলেন।
উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপেও বিএনপির নেতাদের অনেকে প্রার্থী হতে মাঠে তৎপর রয়েছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের অবস্থানে থাকা দলটির বহিষ্কারের সংখ্যা দীর্ঘ হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যারা ভোটে অংশ নিচ্ছেন, তাদের নিয়ে কাজ করছেন, বিএনপির এমন নেতাদের অনুমান, উপজেলা নির্বাচনের শেষ ধাপ পর্যন্ত বহিষ্কারের সংখ্যা দুই থেকে আড়াই শতে গিয়ে ঠেকতে পারে। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় বহিষ্কারের এই সংখ্যাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না বিএনপির নেতৃত্ব।