সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। যেখানে হেসেখেলেই জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ১২৫ রান তাড়া করতে নেমে অভিষেকেই তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে সিরিজ প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামী রোববার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই ওপেনার লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৫ রানে ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান লিটন দাস। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এনগারাভার করা তৃতীয় ওভার শেষে বৃষ্টি হানা দিলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম। তবে আবারও বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে সাজঘরে ফিরে যান শান্ত। দলীয় ৫৭ রানে ২৪ বলে ২১ রান করে আউট হন তিনি। শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাওহিদ হৃদয়। হৃদয়কে সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যান তানজিদ তামিম। এক পর্যায়ে টি–টোয়েন্টি অভিষেকেই ফিফটি তুলে নেন তানজিদ। ২ ছক্কা ও ৬টি চারের মারে ৩৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তানজিদ-তাওহিদের ব্যাটে ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ। ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৪৭ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত তানজিদ। ১ ছক্কা ও ৫ চারে ১৮ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত হৃদয়।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মেহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেগ আরভিনকে (০)। পরের ওভারে তিন বাউন্ডারিসহ ১৩ রান হজম করেন শরিফুল। এরপর তাসকিন এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন।
পঞ্চম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে আসেন সাইফউদ্দিন। ওভারের শেষ বলে জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন তিনি। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মেহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন ব্রায়ান বেনেট (১৬)। পরের বলেই মেহেদীকে সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন সিকান্দার রাজা। ১ বল খেলেই ০ রানে আউট হন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। এতে টানা তিন বলেই ৩ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
পরের ওভারে পেসার তাসকিন আহমেদও পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন। প্রথম বলে ফিরিয়েছেন উইলিয়ামসকে (০)। পরের বলে রিশাদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বার্ল (০)। এতে ৯ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ৮ম ওভারে লুক জঙ্গিকে (২) তাওহিদ হৃদয়ের ক্যাচ বানান সাইফউদ্দিন। এতে ৪১ রানে ৭ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ৮ম উইকেটে মাসাকাদজা–মানদান্দের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে। একশ’ রান করতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই শঙ্কায় ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু মানদান্দে-মাসাকাদজার জুটিতে একশ’ পার হয় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১১৬ রানে মানদান্দেকে ফিরিয়ে মাসাকাদজার সঙ্গে তার ৭৫ রানের জুটি ভাঙল তাসকিন। ৬টি চারে ৩৯ বলে ৪৩ রানে আউট হলেন মানদান্দে।
শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে মুজারাবানিকে (১) বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। এটি সাইফউদ্দিনের তৃতীয়। শিকার ক্রিজে জিম্বাবুয়ের শেষ জুটি মাসাকাদজা ও এনগারাভা। শেষ পর্যন্ত ১২৪ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিক বোলারদের হয়ে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ। এ ছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী।