বজ্রপাতে একদিনে ৯ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বজ্রপাত
বজ্রপাত। ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃহস্পতিবার (২ মে) বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন। নিহতদের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে তিনজন, কক্সবাজারে দুইজন, কুমিল্লায় দুইজন, সিলেটে একজন ও খাগড়াছড়ির একজন রয়েছেন।

জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

তীব্র তাপপ্রবাহের পর পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে বৃষ্টি নেমেছে। এসময় বজ্রপাত হলে তিনজন নিহত হন। রাঙ্গামাটি শহরের সিলেটি পাড়া ও বাঘাইছড়িতে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে। এসময় আহত হন সাতজন।

নিহতরা হলেন রাঙ্গামাটি শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো. নজির (৫০), বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লকের বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) ও সাজেকের লংথিয়ান পাড়ার তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।

রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা জানান, ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার দুই নারী নিহত ও সাতজন আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক প্রধান ডা. শওকত আকবর জানান, সকালে শহরের সিলেটি পাড়া থেকে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।

কুমিল্লা

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে দেবিদ্বার ও বুড়িচং উপজেলায় বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের ধামতী গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে মোখলেসুর রহমান (৫৭) ও বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচোড়া নোয়াপাড়া গ্রামের মো. কুদ্দুস মিয়ার ছেলে আলম হোসেন।

স্থানীয়রা জানান, বিকেল ৫টার দিকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন দেখে বাড়ির পাশে শুকাতে দেওয়া ধানের খড় আনতে যান মোখলেসুর রহমান। এসময় হঠাৎ বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। স্বজনরা উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে নিহতের দাফন-কাফনের জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

বুড়িচং ইউএনও সাহিদা আক্তার জানান, বিকেলে মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে আলম হোসেন নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বজ্রপাতে কিশোরসহ দুই লবণশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়ন এলাকার লবণের মাঠে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মগনামা ইউনিয়নের কোলাইল্লাদিয়া এলাকার জমির উদ্দিনের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩০) ও উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের ছরিপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসাইন (১৪)।

নিহত দিদারের চাচা জাকের হোসাইন বলেন, ভোর ৪টার দিকে আকাশে মেঘ জমলে ভাতিজা দিদারকে নিয়ে আমিও লবণ তুলতে মাঠে যাই। এসময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দিদারুল ইসলাম।

একই সময়ে লবণ তুলতে বাবার সঙ্গে মাঠে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছে কিশোর ফরহাদ হোসাইন। তাকে মাঠ থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আবছার বদু।

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাত নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সকালের দিকে উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ইয়াছিন একই পাড়ার ইউসুফ মিয়ার ছেলে।

বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াছ বজ্রপাতে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিলেট

সিলেটে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে কানাইঘাট উপজেলার দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কৃষকের নাম বাবুল আহমদ (৪৮)। তিনি উপজেলার দক্ষিণ কুওরের মাটি গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

স্বজনরা জানান, স্থানীয় একটি হাওরে বোরো ধান কাটতে যান বাবুল আহমদ। সঙ্গে ছিলেন তার ভাতিজা ফাহিম ও প্রদীপ নামের এক যুবক। এসময় প্রচণ্ড ঝড় শুরু হলে বজ্রপাতে আহত হন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাবুল আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কানাইঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শেয়ার করুন