জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ বিপর্যয়। সংগৃহীত ছবি

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো সিলেট বিভাগ। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে আশুগঞ্জে জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে বিভাগের ৪ জেলা একসঙ্গে ব্ল্যাক আউট (পুরো গ্রিড অকার্যকর) হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

তবে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হাসপাতাল ও স্থাপনার বিশেষ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

universel cardiac hospital

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আশুগঞ্জে জাতীয় গ্রিডে এ বিপর্যয়ের কারণে পিডিবির গ্রাহকরা ছাড়াও পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরাও অন্ধকারে রয়েছেন।

শনিবার (৩ মে) রাত সাড়ে নয়টায় পাওয়া সর্বশেষ খবরে সিলেট ছাড়াও সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের গ্রাহকরা অন্ধকারে রয়েছেন। কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বলে জানা গেছে। আকষ্মিক এ বিপর্যয়ের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন।

জানা গেছে, শনিবার বিকেল থেকে আশুগঞ্জ জাতীয় গ্রিডে সমস্যা দেখা দেয়। এতে বিকেল থেকে বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ৩০-৪০ শতাংশ লোডশেডিং হচ্ছিল। সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের একেবারে ব্ল্যাক আউট হয়ে যায়। এতে সিলেট বিভাগের চার জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির বলেন, আশুগঞ্জে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা সিলেট বিভাগ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের একেবারে ব্ল্যাক আউট হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও ৬-৭ ঘণ্টা লাগতে পারে। আবার কম সময়ের মধ্যেও সচল করা সম্ভব হতে পারে।

তিনি বলেন, এর আগে যখন সিলেটে এরকম বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল, তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে যত সময় লেগেছিল এবারও তত সময় লাগতে পারে। পাওয়ার স্টেশন চালু হতে একটু সময় লাগে। অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলে হাসপাতালসহ কিছু হাসপাতাল ও স্থাপনা যেগুলো খুবই জরুরি। মানুষ মারা যাবে সেসব স্থানে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক রাখতে আশুগঞ্জ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হয়েছে। এটি দিয়ে আপাতত এ হাসপাতাল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির আরও বলেন, সিলেট বিভাগে পিডিবি চাহিদা রয়েছে ২১৫ মেগাওয়াট। বিকেল থেকে ১৮০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। আর পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ মিলিয়ে সিলেট বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬৩০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে শনিবার বিকেলে ৫৯০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হয়েছে। এখন তো একেবারে ব্ল্যাক আউট হয়ে গেছে।

এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলা হয়-১৩২ কেভি গ্রিড লাইন ট্রিপ (বিপর্যয়) করায় দপ্তরের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এতে গ্রাহকদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলা হয়।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, এখনও আমাদের জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে দুটি ব্যবস্থায় জেনারেটর সিস্টেম চালু আছে। পুরো হাসপাতালের জন্য একটি স্টেশন রয়েছে। কখনও এটি নষ্ট কিংবা কাজ না করলে আইসিইউসহ কয়েকটি বিভাগের জন্য বিকল্প জেনারেটর রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন