প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্রান্দে দো সুল। এতে রাজ্যটির অন্তত ৩৯ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৬৮ জন। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রিও গ্রান্দে দো সুল রাজ্য আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে সীমান্ত লাগোয়া। গত সোমবার থেকে রাজ্যটিতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, ঝড়-বৃষ্টিতে রাজ্যের ৪৯৭টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত্যু ও নিখোঁজের পাশাপাশি এসব শহরের অন্তত ২৪ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের
মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যের গভর্নর এদোয়ার্দো লেইতে শুক্রবার বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে উপদ্রুত আরও অনেক এলাকায় আমরা পৌঁছাতে সক্ষম হব। তখন মৃত্যুর সংখ্যায় পরিবর্তন আসতে পারে।’
বৃষ্টিতে রিও গ্রান্দে দো সুলের বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি সড়ক ও সেতু। এছাড়া ঝড়ের কারণে ভূমিধস দেখা দিয়েছে। স্থানীয় একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের জলাধারের আংশিক ধসে পড়েছে। একই এলাকার আরেকটি জলাধারও ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেখান থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে পানির তোড়ে রাজ্যের রাজধানী পোর্তো এলেগ্রের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া গুয়াইবা নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি উপচে শহরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে শহরের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধার মুখে পড়ছেন উদ্ধারকারীরা।
ভৌগোলিকভাবে রিও গ্রান্দে দো সুল ক্রান্তীয় ও মেরু অঞ্চলের মিলনস্থলে হওয়ায় প্রায়ই চরম আবহাওয়ার মুখে পড়ে রাজ্যটি। কখনো কখনো সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। কখনো আবার দেখা দেয় খরা। স্থানীয় বিজ্ঞানীদের ধারণা, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জেলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেখানকার আবহাওয়া আরও চরম রূপ নিচ্ছে।
এদিকে দুর্যোগের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাজ্যটি পরিদর্শনে যান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। এ সময় তিনি রাজ্যের গভর্নরের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে আলাপ করেন। পরে শুক্রবার রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় ফিরে লুলা বলেন, উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধারকাজে পাশে থাকবে তার সরকার।