সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান ‘নিয়ার ইস্ট সাউথ এশিয়া’ (নেসা) সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর একটি প্রতিনিধিদল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে এ প্রশংসা করেন বলে শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এ সময় প্রতিনিধি দলটি মিশনের কর্মকর্তাদের সাথে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে অংশগ্রহণ করেন। খবর বাসসের।
নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর ডিস্টিংগুইশ প্রফেসর ড. হাসান আব্বাস ৪৬ সদস্যের দলটির নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধিদলে ওয়াশিংটন ডিসিতে নেসা সেন্টার আয়োজিত একটি সেমিনারে ২৮টি দেশের অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ড. আব্বাস ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বক্তৃতাকালে সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের দ্বারা দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
ড. আব্বাস বলেন, তার প্রতিষ্ঠান- নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কামনা করে এবং আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান দূতাবাসে নেসা সেন্টারের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত ইমরান তার মূল বক্তব্যে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং দেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকট ইস্যু এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য এবং গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স ফান্ড (জিসিইআরএফ)-এ দেশের অগ্রগতির ওপরও আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূত সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য সকল দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং কোন দেশের পক্ষে এককভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব নয়।
দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ইমরান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সকল রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভুমিতে টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যদি সমস্যাটি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তবে এটি সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং উন্নয়ন উদ্যোগকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি অহিদুজ্জামান নুর সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ ও সাফল্যের বিষয়টি প্রতিনিধিদলের সামনে তুলে ধরেন। ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং এর সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।