গাছ লাগানো ও কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি না করা এবং তাবদাহ ও তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ৪ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে রেসপনডেন্ট (বিবাদী) করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।
পরে এই আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, কুষ্টিয়া জেলা এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ কাটা এবং তাপদাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আর্জি পেশ করে রিটটি আনা হয়। গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় রিটটি দায়ের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়ায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। সেই গাছগুলোর মধ্যে গত বছর ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। সম্প্রতি আরও ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে কোনোরূপ নীতিমালা নেই। এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ টেনে আইনজীবী বলেন, সেখানে একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগানোর নিয়ম রয়েছে।
এদিকে পরিবেশ রক্ষায় ঢাকাসহ সারাদেশে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রবিবার হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মো. এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈই জনস্বার্থে হাইকোর্টে এই রিটটি করেছেন।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে রিটটি শুনানি হতে পারে।
ওই রিট আবেদনে বলা হয়েছে, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সাম্প্রতিককালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। ফলে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। অন্যদিকে সামাজিক বনায়ন চুক্তিতে সারাদেশে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে- যা বন্ধ না হলে দেশের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে ও মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।