চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত বিমানের একটি অংশ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কর্ণফুলী থানার জুলধা মাতব্বর ঘাট সংলগ্ন এইচএম স্টিল কারখানার পাশে কর্ণফুলী নদী থেকে বিমানের অংশটি উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো উদ্ধার কাজ শেষ হয়নি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাশিয়ার তৈরি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ আসিম জাওয়াদ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি উদ্ধারে নামে নৌবাহিনী। তারা সোনার নামে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে নদীর তলদেশে তল্লাশি চালায়। সেটি দিয়ে বিধ্বস্ত বিমানটির একাংশ শনাক্ত করা হয়। এরপর রাতে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ বলবান বিধ্বস্ত অংশটি উদ্ধার করে।
বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধারে তল্লাশি চালাচ্ছে নৌবাহিনী। তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজ শেষ করেনি। তারা আমাদের কাছে প্রতিবেদন দিলে উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো। তবে বিধ্বস্ত বিমানের একটি অংশ উদ্ধার হয়েছে বলে শুনেছি।
আজ সকালে কর্ণফুলী থানার জুলধা ১১ নম্বর মাতব্বর ঘাট সংলগ্ন নদীতে আকাশে আগুনে বিধ্বস্ত বিমানটি ছিটকে পড়ে। বিধ্বস্ত বিমান থেকে প্যারাশুট দিয়ে বেরিয়ে আসা দুই বৈমানিককে কর্ণফুলী নদীতে চলাচলরত নৌকার মাঝিরা উদ্ধার করেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় আসিম জাওয়াদকে নগরীর বানৌজা ঈসা খানের বানৌজা পতেঙ্গায় (নৌবাহিনী হাসপাতাল) নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোহান বিমান বাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হকে চিকিৎসাধীন আছেন। এরপর থেকে বিধ্বস্ত বিমানটি উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
এর আগেও রাশিয়ার তৈরি ইয়াক-১৩০ মডেলের তিনটি প্রশিক্ষণ বিমান চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হয়। ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালীর পুটিবিলা ও ছোট মহেশখালীতে বিধ্বস্ত হয়। এর আগে একই বছরের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার থানার কাইশ্যাঘোনা এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এসব ঘটনায় পাইলটরা আহত হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
ইয়াক-১৩০ মডেলের যুদ্ধবিমান ১৯৯৬ সালে প্রথম আকাশে উড্ডয়ন করে। এরপর ২০০২ সালে একে রুশ সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রধান আকাশযান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ২০১৫ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে বিমানগুলো কেনা হয়। রাশিয়ার সমরাস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইরকুত করপোরেশন এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান নির্মাণ করে থাকে। যুদ্ধবিমানগুলো মৌলিক ও যুদ্ধ প্রশিক্ষণের জন্য উপযোগী। পাশাপাশি একে আক্রমণের কাজেও ব্যবহার করা যায়।