রাজধানীর মিরপুরে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি মো. সেলিমকে (৪০) সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে চায় তার পরিবার।
সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা আজ রোববার সকালে বলেন, সেলিমের পেটে কাটা দাগের বিষয়টি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চান তারা। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
গত বৃহস্পতিবার মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মো. সেলিমকে উদ্ধার করা হয়। তিনি প্রায় ছয় মাস আগে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৃ-পাঁচাশি গ্রামের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।
সেলিমের ছোট ভাই মাহিন মিয়া বলেন, ভাইকে নিয়ে আসার সময় মিল্টন সমাদ্দারের ফাউন্ডেশনে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে। বাড়িতে আনার পর ভাইয়ের পেটের ডান পাশে বড় দাগ দেখে তারা সন্দেহ করছেন, ভাইয়ের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানি হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা হতদরিদ্র পরিবার। অর্থের অভাবে এখন ভাইয়ের অঙ্গহানি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছি না।
প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মিল্টনের ভাষ্য, মিরপুরে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। সেখানে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হয়। মিল্টন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসহায় বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে প্রচার চালান এবং এ-সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র দেন।
সম্প্রতি মিল্টনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছিল। মিল্টন ফেসবুক ভিডিওতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজ করা কয়েকজন প্রতারণার অভিযোগ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারে লোকজনকে মারধর ও আশ্রিত শিশুকে পাচারের অভিযোগে দুটি, জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক সেজে মৃত্যুসনদ দেওয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়।