কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে দলবেঁধে হামলা করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দেশটির রাজধানী বিশকেকে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ অবস্থায় নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে বাঁচার আকুতি জানিয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত ১৩ মে একদল মিশরীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিরগিজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কী নিয়ে তাদের মধ্যে এ বিরোধ বেঁধেছিল তা নিশ্চিত নয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে কিরগিজ রাজধানীতে বেশ কিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ও বেসরকারি আবাসনে হামলা চালান স্থানীয়রা। এসব হোস্টেল ও ভবনে মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কিরগিস্তান থেকে আমাকে বহু শিক্ষার্থী ছেলে-মেয়ে ফোন করছে, মেসেজ ও ভিডিও মেসেজ পাঠাচ্ছে। সেখানে স্থানীয় নাগরিকরা বিদেশি ছেলে-মেয়েদের মারধর করছেন। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিদেশি যাদের পাচ্ছেন তাদের মারধর করছেন। আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভয়ে লুকিয়ে আছে। আমি তাদের বলেছি, আপনারা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিরাপদ থাকেন। আমি সরকারকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র দফতরের সংশ্লিষ্টদের মোটামুটি সবাইকে ঘটনাটি জানিয়েছি। তাদের বলেছি, জরুরি সহায়তা দরকার।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ওখানে আমাদের মিশন নেই। আমাদের একজন অ্যাম্বাসেডর অ্যাক্রিডিটেড আছে। তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি বলেছি, আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন নিরাপদে থাকে।
এদিকে, এ অবস্থায় নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে কিরগিজস্তানে বসবাসরত নিজ নিজ নাগরিকদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। কিরগিজস্তানে বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকতে এবং দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বরাতে শনিবার ডন জানিয়েছে, শুক্রবার মধ্যরাতে বিশকেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবনগুলোতে হামলা চালায় শত শত কিরগিজ পুরুষ। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকও রয়েছেন। ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে কিরগিজস্তানে বসবাসরত পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে পাকিস্তানি দূতাবাস।