হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসিকে ঘিরে দুশ্চিন্তার ডালপালা বাড়ছে। কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে কোনো তথ্য জানাতে না পারায় এ নিয়ে খোদ ইরানে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। খবর আল জাজিরার।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববারের (১৯ মে) এ দুর্ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় বর্ণনায় ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ বলা হচ্ছে। কিন্তু এতে হেলিকপ্টারটির অবস্থা কী হয়েছে, তা বলা হয়নি। এ পরিভাষায় কী বোঝানো হয়েছে, তাও স্পষ্ট নয়।
ওই হেলিকপ্টারে রাইসি ছিলেন কি না, তা নিয়েও ধোঁয়াশা ছিল। একটি সূত্র বলছে, রাইসি ওই সময় গাড়িতে ছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের ব্যবধানে স্থানীয় কয়েকটি সূত্র তার হেলিকপ্টারে থাকার বিষয়টিতে জোর দেয়। পরে রয়টার্স, আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যগুলো ওই হেলিকপ্টারে রাইসির থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন নিয়েও দুই রকম তথ্য পাওয়া গেছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে সেটি স্থাপন হয়েছে কী না, তা জানা যায়নি।
তবে ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন।
কিন্তু এরপরও নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আলজাজিরার স্থানীয় প্রতিনিধি। তিনি বলেন, বড় প্রশ্ন হলো- রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থার জন্য স্যাটেলাইট ফোন ছিল কি না। সাধারণত তা থাকার কথা। অথচ আমরা এখন যা জানি তা হলো, রাষ্ট্রপতি নিখোঁজ এবং সবাই তাকে খুঁজছে। এ সন্ধান অভিযানে অন্তত ৪০টি অনুসন্ধান দল মোতায়েন করা হয়েছে। এতে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার কাছে একটি তামার খনি আছে বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে ইরানের মাশহাদ শহরে লোকজন জড়ো হয়ে ইবরাহিম রাইসির জন্য প্রার্থনা করছেন। তারা রাইসি ও তার সফর সঙ্গীদের সুস্থভাবে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না তা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব অধ্যয়নের অধ্যাপক ফুয়াদ ইজাদির মতে, দলগুলো হেলিকপ্টারে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। হতে পারে দুর্ঘটনাটি খুব খারাপ ছিল। অথবা এলাকাটিতে নেটওয়ার্ক নাও থাকতে পারে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে।