উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: দ্বিতীয় ধাপেও নির্বাচিত প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের, বিএনপির ছয়জন

মত ও পথ ডেস্ক

উপজেলা নির্বাচন
ফাইল ছবি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আজ মঙ্গলবার ১৫৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন বর্জন করেছে। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী দেয়নি। প্রায় সব উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে কয়েকটি উপজেলায় বিএনপির নেতারাও নির্বাচন করেছেন।

প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা বিজয়ী হয়েছেন। হাতেগোনা কয়েকটি উপজেলায় জয় পেয়েছেন নির্দলীয় প্রার্থী ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা। আজ রাত পৌনে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাওয়া ১০৬টি উপজেলার ফলাফলের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৯১টিতে, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা ছয়টিতে ও বাকি উপজেলায় জাতীয় পার্টি, জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ ও নির্দলীয় প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।

universel cardiac hospital

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম খান, ঘিওরে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান ও দৌলতপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সী, বালিয়াকান্দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হাকিম ও মাদারীপুরের কালকিনিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহীন নির্বাচিত হয়েছেন।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ্ জামান ও সালথায় গট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ মাতুব্বর জয় পেয়েছেন। কিশোরগঞ্জের নিকলীতে বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত মোকারিম সরদার, কটিয়াদীতে আওয়ামী লীগ নেতা মঈনুজ্জামান ও অষ্টগ্রামে কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের নেতা এএফএম মাসুক নাজিম জয়ী হয়েছেন।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. কাবির মিয়া ও কাশিয়ানীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন জয় পেয়েছেন। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি জগলুল হালদারের ছেলে আরিফুল ইসলাম হালদার ও লৌহজংয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বি এম সোয়েব নির্বাচিত হয়েছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, হাজীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন মিয়াজী ও শাহরাস্তিতে আওয়ামী লীগের নেতা মকবুল হোসেন পাটোয়ারী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মকবুল হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও বর্তমানে কোনো পদে নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাইদুর রহমান ও আখাউড়ায় উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মনির হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

খাগড়াছড়ি সদরে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, পানছড়িতে ইউপিডিএফের চন্দ্র দেব চাকমা ও দীঘিনালায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ধর্মজ্যোতি চাকমা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব ও পেকুয়ায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মো. শাফায়েত আজিজ বিজয়ী হয়েছেন। রাঙামাটির বিলাইছড়িতে জনসংহতি সমিতির বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা, রাজস্থলীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা ও কাপ্তাইয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন জয়ী হয়েছেন।

নোয়াখালীর সেনবাগে নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল আলম, চাটখিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির ও সোনাইমুড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাবুল নির্বাচিত হয়েছেন। বান্দরবানের লামায় আওয়ামী লীগের মোস্তফা জামান ও নাইক্ষ্যংছড়িতে সাবেক বিএনপির নেতা তোফাইল আহমদ নির্বাচিত হয়েছেন।

কুমিল্লার বরুড়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের শ্যালক হামিদ লতিফ ভূঁইয়া, সদর দক্ষিণে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল হাই ও আদর্শ সদরে মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ চৌধুরী, মিরপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, কুমারখালীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও ভেড়ামারায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদরে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও আলমডাঙ্গায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম মঞ্জিলুর রহমান জয়ী হয়েছেন।

বাগেরহাটের ফকিরহাটে উপজেলা যুবলীগের স্থগিত কমিটির আহ্বায়ক সেখ ওয়াহিদুজ্জামান, চিতলমারীতে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাফর মো. আলমগীর হোসেন ও মোল্লাহাটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুল আলম ছানা জয়ী হয়েছেন। নড়াইল সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আজিজুর রহমান ভূঁইয়া ও লোহাগড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে এম ফয়জুল হক জয়ী হয়েছেন।

খুলনার ফুলতলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন, তেরখাদায় জেলা মৎস্যজীবী লীগের সহসভাপতি আবুল হাসান শেখ ও দিঘলিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম বিজয়ী হয়েছেন। মাগুরার শালিখায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল কুমার দে ও মহম্মদপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান নির্বাচিত হয়েছেন। সাতক্ষীরার আশাশুনিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমার ও দেবহাটায় নির্দলীয় মো. আল ফেরদাউস নির্বাচিত হয়েছেন।

শেয়ার করুন