ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। গাজার বিভিন্ন স্থানে অভিযানের নামে প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে।
সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ-সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৫৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৯ হাজার ৬৫২ জন।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তর ও দক্ষিণে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের কারণে গত দুই সপ্তাহে গাজার জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ বা ৯ লাখের বেশি মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর গাজার জাবালিয়া ও বেত লাহিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গত কয়েক ঘণ্টায় ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ও ব্রিটিশ আইনজীবী করিম খান। অবশ্য ওই দুজন ছাড়া হামাসের তিন নেতার বিরুদ্ধেও একই আবেদন করেছেন করিম।
হামাসের যে তিন নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে, তারা হলেন- ইয়াহিয়া সিনওয়ার, আল কাসেম ব্রিগেডের নেতা মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরি ও হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া।
করিম খান বলেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল যে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়েছে, তা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। নেতানিয়াহুর পাশাপাশি হামাসের কয়েকজন নেতাও এর জন্য দায়ী।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির এই আবেদনের রায় আসতে কয়েক সপ্তাহ কিংবা কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। আইসিসি গত তিন বছর ধরে অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে হামাসের কর্মকাণ্ডও তদন্ত করেছেন এই আদালত।
এদিকে, বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক অপমান’ বলে আখ্যা দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বেনি গান্টজ এক এক্সবার্তায় লিখেছেন, নিজ নাগরিকদের রক্ষা করতেই যুদ্ধে নেমেছে ইসরায়েল। তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে হামাস নেতাদের সঙ্গে তুলনা করা মূর্খের মতো কাজ।