১৬০টিরও বেশি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে ইতালির নেপলস। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরে ও শহরের আশপাশে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে এসব ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়।
এদিকে ভূমিকম্পের পর ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেখানকার বাড়িঘর থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বহু স্কুলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ইতালির নেপলসের আশপাশের এলাকায় একের পর এক ভূমিকম্পের পর বাড়িঘর খালি করা হয়েছে এবং অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় এবং রাতে সেখানে ১৬০ টিরও বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।
বিবিসি বলছে, এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি ছিল ৪.৪ মাত্রার। দেশটির পোজুলি শহরের কাছে স্থানীয় সময় রাত আটটার দিকে এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ইতালির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্স অ্যান্ড ভলকানোলজি (আইএনজিভি) বলেছে, গত ৪০ বছরের মধ্যে এটিই ছিল এই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
নেপলসের মেয়র গাইতানো মানফ্রেদি স্বীকার করেছেন, একের পর এক কম্পনে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হতে পারেন। তবে তিনি বলেছেন, কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে দেখছেন।
এছাড়া ভূমিকম্পের পর পোজুলিতে শতাধিক তাঁবু তৈরি করা হয় এবং কিছু বাসিন্দা রাতের বেশিরভাগ সময়ই রাস্তায় ছিলেন। যদিও অন্য কিছু বাসিন্দা তাদের আত্মীয়দের সাথে থাকতে অন্যত্র চলে যান।
স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে যে নিম্ন-স্তরের ভূমিকম্প হয়েছে তার কারণে বেশ কয়েকটি পরিবার পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। স্থানীয় একটি আউটলেট নেপলসের একজন বাসিন্দাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তারা কখনও এত শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভব করেনি।
যদিও অবকাঠামোর কোনও উল্লেখযোগ্য ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে নেপলসের কিছু স্কুল মঙ্গলবার পরিদর্শনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পোজুলিতে মহিলাদের কারাগার সতর্কতা হিসাবে খালি করে দেওয়া হয়।
মানফ্রেদি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে ‘আরও গুরুতর ভূমিকম্প হতে পারে’। তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তাদের ‘এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে এবং এর সাথে আমাদের কয়েক মাস বেঁচে থাকতে হবে’।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি লোকেদের আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলতে পারি না, কারণ এটিই স্বাভাবিক। তবে আমি নেপোলিটানদের বলতে পারি, আমরা (পরিস্থিতির দিকে) মনোযোগ দিচ্ছি এবং পর্যবেক্ষণ করছি। এর আগে কখনও এই অঞ্চলটিকে এতো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি, তাই আসুন আমরা যতটা সম্ভব স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি।’