ইন্ডিয়া জোট জিতলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান না বলে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার মূল লক্ষ্য ‘একনায়কতন্ত্র’ থেকে দেশ ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করা বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২২ মে) সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার এমন কোনও উদ্দেশ্য নেই। আমরা (আপ) খুব ছোট দল, মাত্র ২২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।
কেজরিওয়াল দাবি করেন, বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে সব বিরোধী নেতাদের জেলে যেতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন তিনি।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে কেজরিওয়াল বলেন, ‘এ ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি। এটি একটি তাত্ত্বিক প্রশ্ন। আমরা যখন একসঙ্গে বসব, তখন এ নিয়ে আলোচনা করব।’
ইন্ডিয়া জোটে কোনও প্রধানমন্ত্রীর মুখ না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কেজরিওয়াল বলেন, ‘এই মুহূর্তে সবার উদ্বেগ হলো যে তারা (বিজেপি) কাউকে ছাড়বে না।’
দিল্লিতে বিরোধীদের জোটের জয় হবে বলেও আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আম আদমি পার্টি এবং ইন্ডিয়া ব্লকের এতটাই ঢেউ উঠেছে যে, আমি অবাক হবো না যদি বিধানসভা নির্বাচনের আগের রেকর্ড যেখানে আমরা ২০১৫ সালে ৬৭টি আসন এবং (২০২০ সালে) ৬২টি আসন জিতেছিলাম, এবার তা ভেঙে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। ইন্ডিয়া ব্লক ৩০০টির কাছাকাছি আসন পেতে চলেছে। ইন্ডি জোটই কেন্দ্রে সরকার গঠন করবে। এই জোট একটি ভালো এবং স্থিতিশীল সরকার উপহার দেবে।’
ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) ইঙ্গিত করে কেজরিওয়াল বলেন, ‘এবারের লোকসভা ভোট ছিল বর্তমান স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য। তারা ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্রকে শেষ করে দেবে।’
গত ১০ মে আবগারি মদ নীতি সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তী জামিন দেন। তিনি জানান, তার গ্রেপ্তার এবং জেলে সময় কাটানো দিল্লির ভোটারদের কাছে একটি আবেগের বিষয়। এই আবেগ বিজেপিকে আঘাত করবে।
তার মতে, একজন ‘ভালো মানুষকে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভেবে জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা একনায়কতন্ত্রের কথা শুনছি এবং লোকেরা বলছে যে তাদের এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। এই অনুভূতি খুবই শক্তিশালী।’
কেজরিওয়াল মনে করেন, বিজেপি তাকে জেলে পাঠিয়েছিল এই ভেবে যে, এতে তার দল দুর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা (বিজেপি) ভেবেছিল আমাকে গ্রেপ্তার করার পর প্রচারে প্রভাব পড়বে, আমাদের দল ভেঙে যাবে, বিধায়করা ভেঙে পড়বে, সরকারের পতন হবে। কিন্তু ঘটল উল্টোটা। আমাদের দল আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, আমাদের নেতৃত্ব একটি পরিবারের মতো কাজ করেছে। আমাদের কর্মীরা যখন দেখেছেন যে তাদের নেতা কারাগারে রয়েছেন, তখন তারা আরও কঠোর পরিশ্রমে উত্সাহিত হয়েছেন।’