আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায় ঘোষণার কয়েক মিনিট পরেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফার শহরের একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালালো ইসরায়েল। শুক্রবার (২৪ মে) আইসিজে রাফায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরপরই রাফার শাবৌরা শরণার্থী শিবিরে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
পাশের হাসপাতালে কাজ করা এক কর্মী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, বোমা হামলার শব্দ ছিল ভয়ঙ্কর ও হামলার পর শাবৌরা ক্যাম্প কালো ধোঁয়ার মেঘে ঢেকে যায়। হামলার তীব্রতার কারণে এখনো উদ্ধারকারী দলগুলো সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।
শুক্রবার গাজায় যুদ্ধাপরাধের শুনানি চলাকালে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফা শহরে হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালেতের ১৫ বিচারকের একটি প্যানেল এই নির্দেশ দেয়।
এদিন আদালতের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম বলেন, রাফায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেনি, বরং আরও অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে, সম্প্রতি রাফা থেকে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের ঝুঁকি কমানোর জন্য ইসরায়েল যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছি বলে মনে হয় না।
‘বর্তমানে রাফায় মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। ইসরায়েলকে অবশ্যই অবিলম্বে রাফায় তার সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি এমন যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, যা গাজাবাসীর জীবনকে আরও মর্মান্তিক করে তুলতে পারে।’
এছাড়া আইসিজে কর্তৃক আদেশকৃত ব্যবস্থা প্রয়োগের অগ্রগতি সম্পর্কে ইসরায়েলকে এক মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রবেশের জন্য ইসরায়েলকে রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাফাকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করে ইসরায়েল। সেসময় গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি শহরটিতে আশ্রয় নেয়।
সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ লাখ মানুষের আবাসস্থল হয়ে ওঠে শহরটি। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে এখানেও ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ায় লাখ লাখ গাজাবাসী শেষ নিরাপদ স্থান ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৮ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি রাফা থেকে পালিয়ে গেছে।
সূত্র: বিবিসি