সাম্য ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ব্যক্তিগত জীবন ও সাহিত্যে ভাঙনের গান গেয়েছেন। কারণ, নতুন সৃষ্টির জন্য ভাঙন প্রয়োজন। তিনি কাল অতিক্রম করে মহাকালকে স্পর্শ করে চলেছেন। তাঁকে নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। স্বার্থান্ধ মহল তাদের প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে চেয়েছে। কিন্তু কোনো সীমানায় নজরুলকে আবদ্ধ রাখা যায়নি।
শনিবার ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে এমন নানা অভিভাষণ এবং সর্বজনের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
এদিন সকালে থেকে কবির সমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। র্যালি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন কবি পরিবারের সদস্যরাও।
শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে কবির নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, প্রতিবছরই আবেদন থাকে, জাতীয় কবির জন্মদিন জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হোক। সকল বাঙালির কাছে কাজী নজরুল পৌঁছে যাক। নজরুল রচনাবলি অনুবাদের মাধ্যমে পৃথিবীর সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া সবার দায়িত্ব। এটা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হোক। ‘দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার হে’ গানটি জাতীয় পর্যায়ে ব্যবহার করা দরকার। এটা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কবির আরেক নাতনি মিষ্টি কাজী।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, নজরুল সবসময় মানবিকতার প্রচার করেছেন। তার বর্ণাঢ্য জীবনকে বিশ্লেষণ করে বলা যায়, তিনি অসম্প্রদায়িক মানবিকতার মানুষ ছিলেন। তিনি মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন, এজন্য তিনি সবসময় প্রাসঙ্গিক থাকবেন। জাতীয় জীবনে সামগ্রিকভাবে আমরা অসাম্প্রদায়িকতা-মানবিকতাকে ধারণ করতে পারলে জাতীয় কবিকে প্রকৃতভাবে ধারণ করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বাহাউদ্দিন নাছিমসহ নেতারা শ্রদ্ধা জানান। বিএনপির পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কবির সমাধিতে আরও শ্রদ্ধা জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।