যুক্তরাজ্যের নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই দলছুট এমপির সংখ্যা বাড়ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টিতে। এ পর্যন্ত ৭৮ জন এমপি পদত্যাগ করেছেন, যা দলটির ২৭ বছর আগে ১৯৯৭ সালে ভরাডুবির আগের চিত্রকেও হার মানিয়েছে। ওই বছর ৭২ জন কনজারভেটিভ এমপি পদত্যাগ করেছিলেন। এ অবস্থায় ৪ জুনের জাতীয় নির্বাচনে জয় নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। খবর রয়টার্সের।
পদত্যাগ করা জ্যেষ্ঠ এমপিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসও। সবশেষ গত শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন প্রবীণ এমপি ও সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মাইকেল গোভ। এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘এমন সময় আসে, যখন আপনি মনে করেন চলে যাওয়া উচিত এবং নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে আসা উচিত।’
অন্যদিকে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আন্দ্রেয়া লিডসামও ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। তিনি ২০১৬ সালে কনজারভেটিভ নেতৃত্বের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু থেরেসা মে-এর কাছে হেরে যান।
এই দল ছেড়ে দেওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে কেউ কেউ বলছেন, ঋষি সুনাকের নেতৃত্বে দল ভালো অবস্থায় নেই। আবার কেউ বলছেন, আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জয়ের কোনো সম্ভাবনাই নেই। অনেকে সংসদে অন্তর্দ্বন্দ্ব ও মেরুকরণের অভিযোগ তুলেছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু দেশটিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে ক্ষমতাসীন দলটি জনমত জরিপে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এখন পর্যন্ত হওয়া সব জনমত জরিপের ফল বলছে, সুনাক নির্বাচনে হারবেন। কনজারভেটিভ পার্টিকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে বিরোধী লেবার পার্টি। অবশ্য এমপিদের পদত্যাগের বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু নয় বলে মনে করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করলেও সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগে চ্যালেঞ্জে পড়েছেন ঋষি সুনাক। ফলে জনসম্পৃক্ততা এড়িয়ে তিনি কাছের উপদেষ্টাদের সঙ্গে ছুটির দিন শনিবার সময় কাটিয়েছেন। তবে নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণে এভাবে উপদেষ্টাদের সঙ্গে সময় কাটানো বা সময় ব্যয় করাকে অস্বাভাবিক বলছেন অনেকে।
এ বিষয়ে বিরোধী লেবার পার্টির এমপি স্টেলা ক্রিসি বলেন, সুনাকের মানসিক অবসাদ কাটাতে অতিরিক্ত ছুটি প্রয়োজন। আর যুক্তরাজ্যেরও এখন একটি নতুন সরকার দরকার।