প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, তা বিবেচনা না করে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে যে দেশগুলো বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে, তাদের সঙ্গেই কাজ করবে। তিনি বলেন, আমার নিজের দেশের উন্নয়ন আমার আগে দরকার। আমার দেশের উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করবে, আমি তাদেরকে নিয়ে চলবো। সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে কে কার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, সেটা দেখার দরকার নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ‘আমার চোখে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক মিনিটব্যাপী ভিডিও চিত্র তৈরি প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিতদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। শান্তির স্বপক্ষে তাঁর বলিষ্ঠ অবস্থানের পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় শান্তি চাই। আমরা যুদ্ধ চাই না। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। আর সেই বন্ধুত্ব রেখেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সামনে অনেক কাজ। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো। আর তোমরাই হবে সেই স্মার্ট বাংলাদেশের মূল সৈনিক এবং তোমরাই এ দেশকে গড়বে। কারণ, তোমরা ইতিহাসকে যেভাবে তুলে ধরেছ, তাতে সত্যিই আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। তিনি অংশগ্রহণকারীদেরকে অনেক দোয়া ও অভিনন্দন জানিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদেরকেও ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, এই বাংলাদেশকে কেউই পেছনে টানতে পারবে না। ১৫ আগষ্টের পর যেভাবে আমাদের ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করা হয়েছিল, আর যেন কেউ এটা করতে না পারে, সেজন্য আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী স্কুল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীর মধ্যে সনদপত্র, ক্রেস্ট ও আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেন।
তিনি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জাতির পিতাকে নিয়ে ভিডিও চিত্র নির্মাণ প্রসঙ্গে আনন্দানুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজকের নতুন প্রজন্ম, তোমরাই একদিন এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা করতে হলে একটা আদর্শ লাগে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আগামী দিনের পথচলা আমাদের নিজেদেরকেই খুঁজে বের করে আমরা যেন সুন্দরভাবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সেভাবেই নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা ছাড়া কখনো এটা সম্ভব নয়। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিকে দারিদ্রমুক্ত করা যায়না। শিক্ষাই হচ্ছে সব থেকে বড় অর্জন।
নিজের এবং ছোট বোন শেখ রেহানার সন্তানদের দেওয়া উপদেশের উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্য তাঁরা কোনো সম্পদ রেখে যেতে না পারলেও তাদের শিক্ষায় শিক্ষিত করে যাবেন, যে সম্পদ কোনোদিন কেউ তাদের কাছ থেকে চুরি করতে পারবে না বা কেড়ে নিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির। জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগ। কাজেই ছেলে-মেয়েদের এটাই বলবো, লেখাপড়া ও জ্ঞানার্জন ছাড়া নিজেদের যেমন তেরি করতে পারবে না, দেশকেও তৈরি করতে পারবে না।