রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভবন থেকে এক জাপান প্রবাসী যুবকের পচা-গলা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে বাড়ির বাসিন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকের ২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে আরিফুল ইসলাম (২৭) নামের ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ভাটার থানার পুলিশ।
লাশের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ সময় একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া নোটারি করা বিবাহের হলফনামা উদ্ধার করা হয়েছে।
নোটারিতে উল্লেখ রয়েছে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর নরসিংদীতে আরিফ ও পারভিন বিয়ে করেন।
শনিবার রাতে লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে গুলশান বিভাগের ভাটারা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা বলেন, ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মাটি প্রপার্টিস নামের একটি ভবনে অনলাইনে বাসা বুকিং করে দেশি-বিদেশি নাগরিকরা ভাড়া নেন। গত ১৭ মে আরিফ ও পারভীন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভবনের দোতলার একটি বাসা সাত দিনের জন্য ভাড়া নেন। সেদিনই তারা দুজনে ওই বাসায় ওঠেন। শনিবার মাটি প্রপার্টিসের বাসিন্দারা লাশের তথ্য জানিয়ে থানায় ফোন করেন।
এসি রাজন কুমার আরও বলেন, আরিফ নরসিংদীর রায়পুরা থানার আদিয়াবাদ কালিকুরপাড়া এলাকার শাহজাহান শিকদারের ছেলে। এই হত্যায় জড়িত আরিফের স্ত্রী পরিচয় দেওয়া পারভীন আক্তার নরসিংদী সদরের সাটিরপাড়া এলাকার মো. নুরুল ইসলামের মেয়ে। তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
আরিফের পরিবারের বরাত দিয়ে রাজন কুমার বলেন, আরিফ এক বছর ধরে জাপান প্রবাসী। জাপানে নাচুকি (আয়েশা) নামের এক নারীকে বিয়ে করেছেন। আরিফ ও পারভীনের প্রেমের বিষয়টি জানলেও বিয়ের ব্যাপারে কোনো তথ্য পরিবারের সদস্যদের কাছে নেই। জাপানে থাকা আরিফের স্ত্রী আয়েশা ফোন করে জানিয়েছেন, আরিফ দেশে গিয়েছে, কিন্তু তার কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। ফোনে কয়েকদিন ধরে কথা বলতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, মাটি প্রপার্টিসে দেওয়া পারভীনের মোবাইল নম্বরের সূত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পারভীন ১৭ মে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বসুন্ধরা আবাসিকের মাটি প্রপার্টিসের অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। ১৭ মে বিকাল ৪টার দিকে পারভীন ও আরিফুল ইসলাম একত্রে এই ফ্ল্যাটে ওঠেন। ১৮ মে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পারভীন একাই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান। তার মোবাইল নম্বরের সর্বশেষ অবস্থান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণ করছে, পারভীন আক্তার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে আরিফুলকে হত্যা করেছেন।
এ বিষয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান রাজন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।