টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নবাগত উগান্ডা পাত্তাই পেল না আফগানিস্তানের কাছে। আগে ব্যাট করে বড় সংগ্রহই গড়ে আফগানরা। পরে তাদের পেসার ফজল হক ফারুকি ও অন্য বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আফ্রিকান দলটির ব্যাটাররা। আর তাতে বিশাল জয় দিয়ে আসর শুরু করলো আফগানরা।
গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে আজ গ্রুপ ‘সি’-এ নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১২৫ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান। রানের হিসাবে এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চতুর্থ সর্বোচ্চ জয়। আগে ব্যাট করে দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহীম জাদরানের ব্যাটে ভর করে ৫ উইকেটে ১৮৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। জবাবে ১৬ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করলেও সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫৮ রান তুলতে পারে উগান্ডা। সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার দিক থেকে এটি বিশ্বকাপের চতুর্থ সর্বনিম্ন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানরা দুই ওপেনারের ব্যাটেই তুলে ফেলে ১৫৪ রান। গুরবাজ ও জাদরান যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে আফগানদের দুইশ পার ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ১৫তম ওভারে উগান্ডার অধিনায়ক ও লেগ স্পিনার ব্রায়ান মাসাবা বিদায় করেন জাদরানকে। ৪৬ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৭০ রান করা জাদরান ফিরেছেন সরাসরি বোল্ড হয়ে।
পরের ওভারেই ফেরেন গুরবাজও। উগান্ডার বোলার আলপেশ রামজানির বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৪৫ বলে ৭৬ রান করেছেন গুরবাজ; হাঁকিয়েছেন ৪টি করে ছক্কা ও চার। তবে এরপর অদ্ভুতভাবে রানের চাকার গতি কমে যায় আফগানিস্তানের। উইকেটও পড়ে নিয়মিত বিরতিতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ নবি। বাকিরা দুই অঙ্কও ছুঁতে পারেননি। ফলে দুইশ থেকে অনেকটা দূরেই থামে তাদের ইনিংস।
তবে বোলিংয়ের শেষদিকে সাফল্য পেলেও উগান্ডার আসল দুর্বলতা প্রকাশ পায় ব্যাটিংয়ে। আফগান পেসারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি কেউ। প্রথম ওভারেই তাদের জোড়া ধাক্কা দেন ফারুকি। পর পর দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি উগান্ডা। টানা উইকেট পতনে একসময় ১৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। ইনিংসের তখন কেবল চতুর্থ ওভার।
পঞ্চম উইকেট পতনের পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে উগান্ডা। ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকেন রিয়াজাত আলী শাহ ও রবিনসন ওবুয়া। কিন্তু রান তুলতে পারছিলেন না তারা। যদিও দুজনেই কোনোমতে দুই অঙ্কে পৌছান। এর মধ্যে রিয়াজাত গড়েছেন টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটের ইনিংস খেলার রেকর্ড। কমপক্ষে ২৫ বল খেলে সর্বনিম্ন স্ট্রাইক রেট এখন রিয়াজাতের (৩৪ বলে ১১ রান, স্ট্রাইক রেট ৩২.৩৫।
রিয়াজাত ও রবিনসনের প্রতিরোধ ভাঙে ১৩তম ওভারে। যেখানে প্রথম বলেই রিয়াজাত ও পরের বলে মাসাবাকে ফিরিয়ে ফের একবার হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ফারুকি। তবে এবারও হয়নি। কিন্তু ওভারের শেষ বলে রবিনসনকে বিদায় করেন ফারুকি। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যা চতুর্থ সেরা বোলিং ফিগার। বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আফগানিস্তানের নাভিন-উল-হক ও রশিদ খান। বাকি উইকেট মুজিব উর রহমানের।