রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের লাগাম পরানো যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি, সাবেক ও বর্তমান আমলাদের পর্ষদে পরিচালক নিয়োগ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়োজিত পর্যবেক্ষকও খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না। ফলে গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে অগ্রণী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি (বিডিবিপি) ছাড়া সব কটি সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত মেনে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চারটি ব্যাংককে চলতি জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১২ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক চারটি হলো সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক। তবে মার্চ পর্যন্ত কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এই সীমার মধ্যে আসেনি। কারণ, কোন কৌশলে খেলাপি ঋণ কমানো হবে, সে ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে সরকারি খাতের বেশিরভাগ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ না কমে উল্টো বেড়েছে।
বাংলাদেশের জন্য দেওয়া আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্তের একটি হলো, ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার কমানো। ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলেছে সংস্থাটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বের সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ১৩ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। এই তিন মাসে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৩১৪ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯৩ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।
তবে এই তিন মাসে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৬১২ কোটি টাকা কমে হয়েছে ২০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা এবং বিডিবিপির খেলাপি ঋণ ১২০ কোটি টাকা কমে হয়েছে ৮৭৩ কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত মার্চ শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার দাড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ, জনতা ব্যাংকের ৩১ শতাংশ, অগ্রণী ব্যাংকের ২৮ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ২১ শতাংশ, বিডিবিপির ৩৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও বেসিক ব্যাংকের ৬৩ শতাংশ।