বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়া যেতে না পারার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৫ জুন) জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান সরকারপ্রধান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নে- নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ব্যর্থতা কার জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। অনেকেই যেয়ে থাকে। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কী সমস্যা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানে সরকার সহযোগিতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক দালালের মাধ্যমে করে, দালালের মাধ্যমে যেতে চায়। যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। এতে সমস্যা তৈরি হয়।
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছিল বলে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বিশেষ ফ্লাইট, অন্যান্য ফ্লাইটের সঙ্গে সংযুক্ত করে সবাইকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই বাদ পড়ে গেছে। বাদ পড়ার কারণ কি সেটা অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যখনই আমরা আলোচনা করে ঠিক করি কত লোক যাবে, কীভাবে যাবে। তখনই দেখা যায় আমাদের দেশের এক শ্রেণির লোক, যারা জনশক্তির ব্যবসা করে, তারা তড়িঘড়ি করে লোক পাঠানোর চেষ্টা করে। এদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কিছু লোকও সংযুক্ত আছে। যার ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। প্রতিবারই যখন সরকার আলোচনা করে সমাধানে যায়। তখনই কিছু লোক ছুটি যায়, একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যারা যায় তাদের কাজের ঠিক থাকে না, চাকরিও ঠিক থাকে না, বেতনের ঠিক থাকে না, সেখানে গিয়ে বিপদে পড়ে। এটা শুধু মালয়েশিয়া না, অনেক জায়গায় ঘটে।
বার বার আমি দেশবাসীকে বলেছি জমিজমা, ঘরবাড়ি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা খরচ করার দরকার নেই। যদি দরকার হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে। প্রয়োজনবোধে বিনা-জামানতে ঋণ দেওয়া হয়। সেখানে তাকে সুনির্দিষ্ট করতে হবে সে যে যাচ্ছে তার চাকরিটা সুনির্দিষ্ট কিনা, এটা হলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে।
সরকারপ্রধান বলেন, তারপরও আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে, কে আগে যাবে, সেই দৌড় দিতে যেয়ে হাতা-খাতা বাড়ি-ঘর সব বিক্রি করে তারপরে পথে বসে। অথবা সেখানে যদি চলেও যায় বিপদে পড়ে। সবাইকে বলেছি, এভাবে না যেতে। নিয়ম মেনে গেলে বিপদের সৃষ্টি হয় না। এবার যে সমস্যা হচ্ছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি, কেউ দায়ী থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনী থেকে বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া বারবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফেনীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া প্রকল্প ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বন্ধ করে দেন তিনি। সেগুলো নিজের এলাকার উন্নয়নে খালেদা জিয়া তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে ফেনীর যথাযথ উন্নয়ন হয়।
তিনি বলেন, ফেনী যেহেতু খালেদা জিয়ার নির্বাচনী এলাকা, এখানে বৈরি পরিবেশ সবসময় ছিল। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বঙ্গবন্ধু অথবা তার পরিবারের নামে কোনো স্থাপনা হবে, এটা কখনো তারা চাননি। যত্রতত্র বঙ্গবন্ধু বা আমার পরিবারের নামে যাতে কোনো কিছু না হয় তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সিদ্ধান্ত আছে। কিছু করতে গেলে ট্রাস্টের অনুমিত নিতে হয়। ফেনীতে বঙ্গবন্ধুর নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হবে কি না তা যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।