বোলাররাই অর্ধেক কাজ করে দিয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ১২৪ রানেই থামিয়ে দিয়েছিলেন রিশাদ-মোস্তাফিজ-তাসকিনরা। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় বাকি কাজটি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বলা যায়, সেই সহজ লক্ষ্যই কঠিন করে জিততে হলো বাংলাদেশকে। অবশেষে জয় নিয়েই ফিরেছে বাংলাদেশ। ৬ বল হাতে রেখে লঙ্কানদের ২ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে টাইগাররা।
আজ শনিবার ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে লঙ্কানদের জবাব দিতে নেমে শুরুতে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
চতুর্থ উইকেটে লিটন দাসকে নিয়ে ম্যাচ ধরেন তাওহিদ হৃদয়। হৃদয়ের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে এই জুটিতে বাংলাদেশ পায় ৩৮ বলে ৬৩ রান। ফলে শঙ্কা কেটে যায় অনেকখানি। ১২তম ওভারের প্রথম ৩ বলে ৩ ছক্কা হাকিয়ে চতুর্থ বলে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে এলবিডব্লিউ হন হৃদয় (২০ বলে ৪০)। তখন বাংলাদেশের বোর্ডে ৯১ রান।
শেষদিকে ১৯ রান নিতে আরও ৪ উইকেট হারিয়ে হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ৯৯ রানে এলবিডব্লিউ হন লিটন। ১০৯ রানের মাথায় মাথিশা পাথিরানার বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে থিকসানার হাতে ধরা পড়েন সাকিব আল হাসান (১৪ বলে ৮)।
এরপর ১১৩ রানে থাকতেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নুয়ান থুসারাকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন রিশাদ হোসেন (৩ বলে ১)। পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বুটে বল লাগলে থুসারার জোরালো আবেদনে আঙুল তোলেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ পক্ষে যায় লঙ্কানদের।
শেষে ১২ বলে ১১ রান দরকার বাংলাদেশের। দাসুন শানাকাকে ওভারের প্রথম বলেই দারুণ এক ছক্কা হাঁকান মাহমুদউল্লাহ। এতে ম্যাচ চলে আসে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। ওভারে এক ওয়াইড আর শেষ বলে দৌড়ে ২ রান নিয়ে পুরো ১১ রান করে তুলে নেয় টাইগাররা। এতে উচ্ছ্বাসে ভাসেন বাংলাদেশ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নাম লঙ্কানরদের শিবিরে প্রথম আঘাত করেন তাসকিন আহমেদ। দলীয় ২১ রানের মাথায় ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে (৮ বলে ১০) বোল্ড করেন টাইগার পেসার।
লঙ্কানদের ডেরায় দ্বিতীয় আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় তিনে নামা কামিন্দু মেন্ডিসকে (৫ বলে ৪) তানজিম সাকিবের ক্যাচ বানান তিনি। আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মোস্তাফিজ। ঝোড়ো ব্যাটিং করা এই ব্যাটার ফিফটিবঞ্চিত করেন টাইগার পেসার। ২৮ বলে ৪৭ রান করে ফেরত যান নিশাঙ্কা।
চারিথ আশালঙ্কার উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। সাকিব আল হাসানের হাতে তালুবন্দি হওয়ার আগে এই লঙ্কান ব্যাটার করেন ২১ বলে ১৯ রান। পরের বলেই লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (১ বলে ০) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান লেগস্পিনার রিশাদ। তবে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করতে পারেননি তিনি।
ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা টিকে থাকায় চেষ্টায় থাকলে বেশিক্ষণ পিচে থাকতে পারেননি। ২৬ বলে ২১ রান করা এই ব্যাটার রিশাদের তৃতীয় শিকার হন। তাসকিনের বলে বিহাইন্ড দ্য উইকেটে ক্যাচ হন দাসুন শানাকা (৭ বলে ৩)।
মাহিশ থিকসানাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মোস্তাফিজ। ৩ বল খেললেও এই লঙ্কান ফেরত যান খালি হাতে। তানজিম হাসান সাকিবের শিকার হওয়ার আগে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ করেন ১৯ বলে ১৬ রান। এতে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১২৪ রান।
৩টি করে উইকেট নেন রিশাদ ও মোস্তাফিজ। ২ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। ১টি উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব। আর বিশ্বকাপ অভিষেকেই ম্যাচের সেরা হন রিশাদ হোসেন।