ব্যবসায়ীদের মূল প্রস্তাবগুলো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি : বিজিএমইএ

মত ও পথ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ নেতারা। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেছেন, বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের (ব্যবসায়ীদের) মূল প্রস্তাবগুলো প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। বাজেটে শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাজেটের ইতিবাচক দিক।

শনিবার (৮ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ-এর যৌথ সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

এস এম মান্নান বলেন, বিশেষ করে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ কমে আসায় আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের এই প্রধান খাতটির জন্য কিছু নীতি সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হলেও মূল প্রস্তাবগুলো প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। তবে বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের জন্য সহায়ক প্রস্তাবনাগুলোকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পলিয়েস্টার ফাইবার (পিএসএফ) ও পেট চিপস (টেক্সটাইল গ্রেড)উৎপাদনে ব্যবহৃত দুটি কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ১০ ও ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করা হয়েছে। এগুলো নিঃসন্দেহে শিল্পের জন্য সহায়ক। তবে বাজেটে বেশ কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে যেগুলো বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সহায়ক হবে না বলে আমরা মনে করছি। যেমন : স্টিল বিল্ডিং তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর ওপর আমদানি শুল্ক পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে নির্ধারণ করার প্রস্তাব; অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মূলধনী যন্ত্রাংশ ও নির্মাণ সামগ্রীর আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশ থেকে এক শতাংশ নির্ধারণ; জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব; নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার টাকার স্থলে এক লাখ টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক পাঁচ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব।

ব্যবসায়ী নেতারা সংবাদ সম্মেলনে জানান, আপনারা জানেন যে কোভিড মহামারি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভূ-রাজনৈতিক কারণে সৃষ্ট বিশ্বমন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে সুদের হার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে এসেছে। একই সঙ্গে পণ্যের দরপতন হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যয় পাঁচ বছরে দফায় দফায় প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শিল্প একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে আমাদের পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে। শুধু মে মাসেই কমেছে ১৭ শতাংশ। আমরা মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়িয়েছি, কিন্তু আমাদের মূল্য বাড়েনি। বরং গত ৯ মাসে আমাদের প্রধান পণ্যগুলোর দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ। শিল্প যখন এরকম একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে রয়েছে, তখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিলো সিংহভাগ রপ্তানি আয় অর্জনকারী পোশাক শিল্পকে সহায়তা দেয়া এবং এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা।

শেয়ার করুন