জাতিসংঘের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংস্থা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনে বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রার্থী হিসেবে ১৮৯ ভোটের মধ্যে ১৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাকক্ষে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা ও উজবেকিস্তান এ নির্বাচনে জয়লাভ করে।
ইকোসক জাতিসংঘের মূল ৬টি অঙ্গসংস্থার একটি এবং বহুপক্ষীয় ও উন্নয়ন কূটনীতি প্রশ্নে জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা ও ভিশন-২০৪১ : স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাস্তবায়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে চলছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের উন্নয়ন বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। নির্বাচনস্থলে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশের বিজয়কে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সফলতার বৈশ্বিক স্বীকৃতির অংশ এ বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বস্তুত, বাংলাদেশ যে অন্যান্য দেশের বিশ্বাস, নির্ভরতা ও সম্মান অর্জন করেছে– সাধারণ বিবেচনায় বাংলাদেশের অব্যাহত বৈশ্বিক নির্বাচনে সাফল্য- বিশেষত, অত্যন্ত সম্মানজনক এ নির্বাচনের সাফল্য তারই স্বীকৃতি। শুক্রবারই রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতিসংঘের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির (২য় কমিটি) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস-এর সভাপতিত্বে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের বিজয় বার্তায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, ‘এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নের স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ’।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহিত বলেন, ইকোসকের সদস্যপদ আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে অবাধ ও টেকসই উত্তোরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইকোসকের সদস্যপদ জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরাম, কমিশন, কমিটি, নির্বাহীবোর্ড, ইউএনএসকাপ-এর মতো আঞ্চলিক প্ল্যাটফরমসমূহে সহায়ক নীতি প্রণয়নসহ বাংলাদেশের নেতৃত্ব এবং জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে। এ বিজয় আমাদের উন্নয়ন অভিজ্ঞতার সাফল্যসমূহকে বিশ্বের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে সহায়ক হবে বলে রাষ্ট্রদূত মুহিত উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বর্তমানে ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএনঅপ্স-এর নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
ইকোসক’য়ে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিন বছর মেয়াদে (২০২৫-২০২৭) বাংলাদেশ দায়িত্ব পালন করবে।