লিবিয়ায় অপহারণকারীদের হাতে জিম্মি থাকার ১০ দিন পর উদ্ধার হয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের ৪ যুবক। লিবিয়ার সেনাবাহিনী কর্তৃক উদ্ধার হওয়া সোহান প্রাং (২০) তার মাকে ভিডিও কলে উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন।
ছেলের মুক্তিতে খুশি মা ধুলি বেগম। উদ্ধারের খবর পেয়ে অপহৃত চার যুবকের পরিবারসহ বিয়াঘাট এলাকাবাসীর মনে বইছে খুশির জোয়ার।
সোহান তার মাকে ভিডিও কলে বলেন, ‘মা তুমি আর কেঁদো না। আমরা এখন মুক্ত। সবাই সুস্থ আছি। বর্তমানে আমরা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছি।’
উদ্ধারকৃত সোহান উপজেলার বিয়াঘাট গ্রামের মো. শাজাহান আলীর ছেলে। অপর তিনজন হলেন- একই গ্রামের মো. তয়জাল শেখের ছেলে মো. সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩২) এবং এমদাদুলের ছেলে মো. বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।
জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লিবিয়ায় চাকরি করছিলেন এমদাদুল হক। ছেলে বিদ্যুৎ হোসেনসহ গ্রামের অপর তিন জনকে নিয়ে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সংসারে স্বচ্ছলতার আশায় নিঃস্ব হয়ে নিজ ভিটামাটি বন্দক, ধার-দেনা, আর ঋণ করে তিন যুবককে বিদেশে পাঠান তাদের পরিবার। সেখানে কাজ করে প্রতি মাসে পরিবারে পাঠাতেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানোসহ ঋণ পরিশোধ করতে থাকেন তাদের পরিবার।
গত ২ জুন ওই চার যুবককে অপহরণ করে নির্যাতনের ভিডিও বার্তা পরিবারের কাছে পাঠালে তাদের মধ্যে নেমে আসে অন্ধকার। জনপ্রতি ১০ লাখ করে চার পরিবারের কাছে চাওয়া হয় ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু সব মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্যও তাদের পরিবারের ছিল না।
অবশেষে রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে লিবিয়ার বেনগাজি শহর থেকে তাদের উদ্ধার করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর উদ্ধারের খবর সেখান থেকে ভিডিও বার্তায় নাটোরের গুরুদাসপুরে ওই চার পরিবারের কাছে জানানো হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়াদের পরিবারের সদস্যরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, লিবিয়ায় জিম্মি থাকা ৪ যুবকের উদ্ধারের ঘটনা পুলিশ সুপার আমাকে অবহিত করেছেন। খবরটি সঙ্গে সঙ্গে ওই চার পরিবারের মাঝে জানানো হলে খুশির জোয়ারে ভাসছেন তারা।