সুফিয়া কামাল গণতান্ত্রিক ও নারী মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ : প্রধানমন্ত্রী

মত ও পথ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কবি বেগম সুফিয়া কামাল। ফাইল ছবি

কবি বেগম সুফিয়া কামালের জীবনদর্শন ও সাহিত্যকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পাঠকের হৃদয় আলোকিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার চিন্তাধারা ও প্রতিজ্ঞা কবি সুফিয়া কামালের জীবনে সঞ্চারিত হয় ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ছাত্রীনিবাসের নাম ‘রোকেয়া হল’ রাখা হয়। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার বেতারে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করলে এর প্রতিবাদে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেন।

universel cardiac hospital

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বেগম সুফিয়া কামালের ১১৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জননী সাহসিকা হিসেবে পরিচিত ও গণতান্ত্রিক এবং নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কবি বেগম সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায়। একদিকে তিনি ছিলেন আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, অন্যদিকে বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তার আপসহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ উপস্থিতি তাকে জনগণের ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে। তার স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ‘বেগম সুফিয়া কামাল হল’ নির্মাণ করে।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা পর এ দেশের ইতিহাস বিকৃতির পালা শুরু হয়। তখন তার সোচ্চার ভূমিকা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নতুন প্রেরণা জুগিয়েছিল।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বেগম সুফিয়া কামালের সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতে থাকে তার সাহিত্যচর্চা। ১৯৩৮ সালে কবি সুফিয়া কামালের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাজের মায়া’র মুখবন্ধ লেখেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। যা সেই সময়ের পাঠকসহ লেখকদের কাছে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ সংস্কার, নারীমুক্তি এবং শিশুতোষ রচনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার লেখনীতে সমৃদ্ধ হয়েছে। কবির ভাষায়- ‘তোমাদের গানে, কল-কলতানে উছসি উঠিবে নদী, সরস করিয়া তৃণ ও তরুরে বহিবে সে নিরবধি; তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি ডাকা রাঙা ভোর, জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর’।

 

শেয়ার করুন