বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে তিনবার হানা দিলো বৃষ্টি। প্রথমবার টসের আগে; বাকি দুই বার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস চলাকালীন। তৃতীয়বার বৃষ্টি কবলে পড়ে ম্যাচই পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। রান তোলায় এগিয়ে থাকার কারণে ডাকওয়ার্থ লুইস বা ডিএলএস মেথডে ২৮ রানের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। হার দিয়েই সুপার এইট পর্ব শুরু করলো বাংলাদেশ।
বৃষ্টির শুরু আগে ১১.২ ওভারে ২ উইকেটে ১০০ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার ৫৩ (৩৫ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায়) আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে। এই মুহূর্তে পার স্কোর ছিল ৭২। ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া।
এর আগেও বৃষ্টির কারণে ১৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। খেলা শুরু হতেই হেডের উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। এই লেগস্পিনারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে ৩১ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন হেড।
ব্যাক টু ব্যাক বোলিংয়ে এসে নতুন ব্যাটার মিচেল মার্শকে এলবিডব্লিউ করেন রিশাদ। সুইপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে বল গিয়ে লাগে মার্শের প্যাডে। বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে আউটের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নিলেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করাতে পারেনি। ৬ বলে ১ রান করে সাজঘরের পথে হাঁটেন অসি অধিনায়ক।
আজ শুক্রবার অ্যান্টিগায় টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় রানের কার্ড চালু হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরত যান তানজিদ তামিম (৩ বলে ০)। মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত ডেভিভারি তার ব্যাটে লেগে স্টাম্প ভেঙে যায়।
এরপর ম্যাচের দায়িত্ব নেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন তারা। সুযোগ নিতে থাকেন দুই-একটি করে বাউন্ডারি। জুটি করে ফেলেন ৪৮ বলে ৫৮ রানের।
অনেকদিন থেকেই রান নেই লিটনের ব্যাটে। কিন্তু আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণভাবে পিচে সেট হয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। আশা করা হচ্ছিল অসিদের বিপক্ষে বড় একটি ইনিংস খেলতে পারবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সে আশায় গুঁড়েবালি হলো। লিটন আউট হয়ে গেলে জুটিটি ভেঙে যায়।
নবম ওভারে অ্যাডাম জাম্পা বোলিংয়ে এলে ব্যাটের সামনে বল পেয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে যান লিটন। এতেই ঘটে বিপত্তি। বল ব্যাটে না লেগে ভেঙে দেয় স্টাম্প। ২৫ বলে ১৬ রান করে ফেরত যান লিটন।
এরপর কিছু রানের আশায় রিশাদ হোসেনকে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে নামানো হয়। তাতে কোনো লাভই হলো না বাংলাদেশের। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে এসে ব্যাটেন কানায় লেগে শট থার্ড অঞ্চলে জাম্পার হাতে ক্যাচ হন তিনি। ৪ বল খেলে মাত্র ২ রান করেন রিশাদ।
ফিফটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন শান্ত। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পাকে সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ৫ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৩৬ বলে ৪১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দলের ভালো অবস্থানের সময় ব্যাটিংয়ে নেমেও আজ তেমন কিছুই করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। মার্কাস স্টয়নিজের বিপক্ষে বাজে একটি শট খেলে তার হাতেই ক্যাচ হন সাকিব (১০ বলে ৮)।
১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে প্যাট কামিন্সকে পুল করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ (৩ বলে ২)। পরের বলেই শেখ মেহেদীকে থার্ড ম্যান অঞ্চলে জাম্পার ক্যাচ বানান কামিন্স। চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামা মেহেদী ফেরত যান ১ বলে ০ রানে।
হ্যাটট্রিক চান্স নিয়ে ২০তম ওভার করতে আসেন কামিন্স। প্রথম বলেই হৃদয়ের উইকেট তুলে নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সপ্তম ক্রিকেটার হিসেবে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন কামিন্স। ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়। শেষ দিকে ৭ বলে ১৩ রান করে মোটামোটি মানের পুঁজি গড়ায় সহায়তা করেন তাসকিন আহমেদ।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন প্যাট কামিন্স। ২ উইকেট নিজের থলিতে পুরেন অ্যাডাম জাম্পা। ১টি করে উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিজ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।