রুদ্ধশ্বাস এক লড়াই। শেষ ওভার পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা। যে উত্তেজনাকর লড়াইয়ে স্নায়ু ধরে রাখলো দক্ষিণ আফ্রিকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের হাইভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে তারা হারালো ৭ রানে।
সুপার এইটপর্বে টানা দ্বিতীয় জয়ে সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা এখন গ্রুপ-টু’তে শীর্ষে। দুই ম্যাচে এক জয় নিয়ে দুই নম্বরে ইংল্যান্ড।
১৬৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ইংল্যান্ডের শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৪ রান। উইকেটে ছিলেন মারকুটে হাফসেঞ্চুরি করা হ্যারি ব্রুক। অ্যানরিখ নরকিয়ার প্রথম বলটিই তুলে মারলেন ব্রুক। কিন্তু সেটি বাউন্ডারি পার হলো না।
মিডঅন থেকে দৌড়ে গিয়ে দুর্দান্ত এক রানিং ক্যাচ নিলেন এইডেন মার্করাম। এই এক ক্যাচেই যেন ম্যাচ ঘুরে গেলো। ৩৭ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ব্রুক ৫৩ করে ফেরার পর আর জয় পাওয়া হয়ে উঠেনি ইংলিশদের।
মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় ১১ ওভারে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৪ উইকেট হারিয়ে মোটে ৬২। এ সময় টানা ২৬ বল বাউন্ডারি পায়নি ইংলিশরা। সেখান থেকে লিয়াম লিভিংস্টোন আর হ্যারি ব্রুকের মারকুটে জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো।
১১ ওভার শেষে ওভারপ্রতি ১১-এর ওপর দরকার ছিল। ব্রুক আর লিভিংস্টোন গড়লেন ৪২ বলে ৭৮ রানের জুটি। ম্যাচটা অনেকটা নাগালে নিয়ে এসেছিলেন তারা।
শেষ ৩ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার পড়ে ২৫। তখনও দুই সেট ব্যাটার ক্রিজে। ১৮তম ওভারে এসে মারকুটে জুটিটি ভাঙেন কাগিসো রাবাদা। বড় শট খেলতে গিয়ে লিভিংস্টোন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে হন ক্যাচ। ১৭ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় তিনি করেন ৩৩ রান। ওই ওভারে রাবাদা দেন মাত্র ৪ রান।
ফলে শেষ দুই ওভারে ২১ লাগে ইংল্যান্ডের। ইংলিশদের ভরসা হয়ে ছিলেন সেট ব্যাটার ব্রুক, ৩৪ বলে তিনি পূরণ করেন ফিফটি। কিন্তু শেষটায় তুলির আঁচড় দিতে পারলেন না। তীরে এসে তরি ডুবলো ইংল্যান্ডের।
দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা আর কেশভ মহারাজ নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে উড়ন্ত সূচনার পর মাঝারি মানের সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে তাদের ছিল বিনা উইকেটে ৬৩ রান। পরের ১৪ ওভারে ১০ উইকেট হাতে রেখেও ৮৪ বলে মোটে ১০০ রান তুলতে পারে দলটি। ইংলিশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১৬৩ রানেই আটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
গ্রস আইলেটে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। প্রোটিয়ারা উড়ন্ত সূচনা পায় মূলত কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে। বাঁহাতি এই ওপেনার ৩৮ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় খেলেন ৬৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।
ওপেনিং জুটিতে রিজা হেনড্রিকসকে নিয়ে ৮৬ রান তোলেন ডি কক। এর মধ্যে হেনড্রিকসের তেমন কোনো অবদান ছিল না। ২৫ বল খেলে তিনি করতে পারেন মাত্র ১৯।
এরপর ডেভিড মিলার ২৮ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। পরের ব্যাটাররা বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি। ইনিংসের শেষ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৮ রান নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা, থামে ১৬৩ রানেই।
ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চার ৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে খরচ করেন ৪০ রান।