আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বারবার চক্রান্ত হয়েছে: গণপূর্তমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বারবার চক্রান্ত করা হয়েছে। কখনো মেকি বাকশাল গঠন করে, কখনো গণতন্ত্রের নামে কামাল হোসেনরা শেখ হাসিনাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে। স্বৈরাচার জিয়া এরশাদরা বারবার তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দূরদর্শী, বলিষ্ঠ ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে আওয়ামী লীগ টিকে আছে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অচিরেই একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা যার নাম দিয়েছেন স্মার্ট বাংলাদেশ তা বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে।

রোববার (২৩ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, যে আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্য নিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বাঙালি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেছিল, প্রতিষ্ঠার পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই তার অসারতা প্রমাণ হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে পূর্ব বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে পৃথক রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং শামসুল হক। এ দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভায় উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও তরুণ শেখ মুজিবুর রহমানকে নেতৃত্বের আসনে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে সার্বজনীন রুপ দেওয়ার স্বার্থে দলের নাম পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ রাখা হয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস সংগ্রাম এবং আন্দোলনের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস সামনে এগিয়ে চলার ইতিহাস। এই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২র শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬র ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উৎপত্তি।

অনুষ্ঠানে ২৫ জন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাদের হাতে মন্ত্রী সম্মাননা ক্রেস্ট ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তিনি তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এবং তাদেরকে মেডেল পরিয়ে দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু। এছাড়া অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী হেলাল উদ্দিনসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে পূর্বাহ্নে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে একই স্থানে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাফল্য ও সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

শেয়ার করুন