তীব্র তাপপ্রবাহে চলতি বছর কমপক্ষে এক হাজার ৩০১ জন হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সৌদি আরব বলছে, এদের মধ্যে বেশির ভাগই অননুমোদিত হজযাত্রী। অনেকেই তীব্র গরমে দীর্ঘ পথ হেঁটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবারের হজের সময়টাতে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। হজের সময় পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৫১ ডিগ্রি পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে। খবর বিবিসির।
সৌদির সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, যারা মারা গেছে তাদের তিন-চতুর্থাংশের সেখানে থাকার আনুষ্ঠানিক কোনো অনুমতি ছিল না। সে কারণে তারা হজের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাননি। তীব্র গরমে অনেকেই তাঁবুতে আশ্রয় নিতে পারেননি এবং সরাসরি সূর্যের আলোর নিচেই অবস্থান করতে হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় হাঁটতে হয়েছে।
যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বয়স্ক বা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ এমন লোকজনও ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ আল-জালাজেল বলেছেন, তীব্র তাপপ্রবাহ যে কতটা বিপজ্জনক এবং কীভাবে হজযাত্রীরা নিরাপদ থাকতে পারেন সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ফাহাদ আল-জালাজেল আরও বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় পাঁচ লাখ হজযাত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি হজযাত্রীই অননুমোদিত। কেউ কেউ এখনও প্রচণ্ড তাপ প্রবাহের কারণে ক্লান্তি নিয়ে হাসপাতালেই অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ নিহতদের প্রতি রহম করুন এবং তাদের ক্ষমা করুন। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারায় বিশ্বজুড়েই বেশ সমালোচিত হচ্ছে সৌদি আরব।
দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রা ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে আপডেট দিচ্ছে। তবে সৌদি আরব রোববার পর্যন্ত কতজনের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেনি বা সরকারি কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।
এক আরব কূটনীতিকের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চলতি বছর হজের সময় ৬৫৮ মিশরীয় মারা গেছে। ইন্দোনেশিয়া বলছে, তাদের দুই শতাধিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া ভারত জানিয়েছে, তাদের ৯৮ জন নাগরিকের মৃত্যুর হয়েছে।
পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, জর্ডান, ইরান, সেনেগাল, সুদান, ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল এবং বাংলাদেশও নিজ নিজ দেশের হজযাত্রীদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে হজ। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম সকল মুসলমান ব্যক্তির জন্য তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার হজ পালন করা ফরজ। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর প্রায় ১৮ লাখ মানুষ হজের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিয়েছেন।